পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বুঝিতে না পারিয়া অবাক হইয়া চাহিয়া রহিলেন । বাহিরের নানা লোক নানা কাজে ব্যস্ত ছিল। সে খানিকক্ষণ এদিক-সেদিক করিয়া হাবুর মাকে ভাকাইয়া আনিয়া কহিল; ও হাবুর মা, বলি, ভায়া যে বাড়ি এসেচেন, শুনেচিম ? ঝি ঘাড় নাড়িয়া কহিল, ই বাৰু, ঘোর রাত্তিরে ছোটবাবু বাড়ি এলেন। গোকুল কহিল, সে ত জানি রে। তার পরে মায়ে-ব্যাটায় কি কি কথা হলো ? আমার নামে বুঝি মা খুব করে লাগালে ? বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাবার টাবার কথা— ঝি বাধা দিয়া কহিল, না বড়বাবু, মা ত ওঠেননি। যন্থ তার ব্যাগটা নিয়ে এলে, আমি ছোটবাবুর ঘর খুলে আলো জেলে দিলুম। তিনি সেই যে ঢুকলেন, আর ত বার হন নি । গোকুল অপ্রত্যয় করিয়া কহিল, কেন ঢাকচিস্ ঝি ? আমি যে সব শুনেচি । গোকুলের কথা শুনিয়া কি বিস্ময়ে ক্ষণকাল চাহিয়া রহিল। তার পরে হাবুর দিব্যি করিয়া বলিল, অমন কথাটি বলে না বড়বাৰু। আমি সৰ্ব্বেক্ষণ দাড়িয়ে থেকে ছোটবাবুর কাজ-কৰ্ম্ম করে দিলুম। তিনি মাকে ডাকতে নিষেধ করে বললেন, ঝি, আর আমার কিছু দরকার নেই। তুই শুধু আলোটা জেলে দিয়ে শুগে যা। আহা ! চোখ-মুখ বসে গিয়ে একেবারে কালিবর্ণ হয়ে গেছে। গোকুলের দুই চোখ ছলছল করিয়া উঠিল। কহিল, তা আর হবে না ? তুই বলিস কি হাবুর মা, বাবা মারা গেলেন, ছোড়া একবার চোখের দেখাটা দেখতে পেলে না—একটা পয়সার বিষয়-আশয় পৰ্য্যস্ত পেলে না—তার মনে মনে যা হচ্চে, তা সে-ই জানে। বাবাকে সে কি ভালই বাসত, তা তোরা সব জানিস্ ? কি বলিস্ হাবুর মা ?—বলিতে বলিতেই গোকুলের চোখের কোণে জল আসিয়া পড়িল। হাবুর মা অনেকদিনের দাসী। চোখের জল দেখিয়া তাহার চোখেও জল আসিল । গাঢ়ম্বরে কহিল, তা আর বলতে বড়বাবু! তেনার বাবা-অস্ত প্রাণ ছিল ষে। তবে কি না বড় বড় লেখাপড়া করতে করতে মগজটা কেমনধাৱা খে গরম হয়ে গেল—তাই— গোকুল হাবুর মাকে একেবারে পাইয়া বসিল। কহিল, তাই বল না হাবুর স্বা। মগজটা গরম হবে মা ? বিস্তেটা কি সে কম শিখেচে । অনার গ্রাজুয়েট, বলি এই হুগলী-চুচড়ো-বাবুগঞ্জে ক’টা লোক আমার ভায়ের মত বিস্তে শিখেচে—কই দেখিয়ে দে দেখি ? লাটসাহেব নিজে এসে যে তাকে হাত ধরে বসায়—সে কি একটা হেজি-পেজি মাহুষ ! তুই ত কি, কিন্তু কলকাতায় গিয়ে কোন ভদ্রলোককে Rse