পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ তার বোনকে চিঠি লিখেচে, তা হলে জেল খাটতে হবে। তবে যদি মা রাজি হয়, বড়বে রাজি হয় তখন বটে। - হাবুর মা ইহার সদুত্তর দিতে না পারিয়া তাহার কাজে চলিয়া গেল। গোকুল মুখ ফিরাইতেই দেখিল হিমু খেলা করিতে যাইতেছে। তাহাকে আদর করিয়া কাছে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, তোর কাকা উঠেচে রে ? হিমু ঘাড় কাত করিয়া কহিল, ই, উঠেই বসবার ঘরে চলে গেলেন-কাক সঙ্গে কথা কইলেন না। বাটীর একাস্তে পথের ধারের একটা ঘরে বিনোদ বসিত । ঘরখানি ইংরেজি ধরণে সাজানো ছিল—এইখানেই তাহার বন্ধু-বান্ধবেরা দেখা-সাক্ষাৎ করিতে আসিত। গোকুল পা টিপিয়া টিপিয়া কাছে গিয়া জানালার ভিতর দিয়া চাহিয়া দেখিল, বিনোদ চৌকিতে না বসিয়া নীচে মেঝের উপর মুখ করিয়া চুপ করিয়া বসিয়া আছে। তাহার এই বসিবার ধরণ দেখিয়াই গোকুলের দুটি চক্ষু জলে পরিপূর্ণ হইয়া গেল। সে নীরবে দাড়াইয়া ছোট ভাইয়ের মুখখানি দেখিবার আশায় মিনিট পাঁচ-ছয় অপেক্ষা করিয়া শেষে চোখ মুছিয়া ফিরিয়া আসিল । চক্রবর্তী কহিল, বড়বাবু, অধ্যাপক-বিদায়ের ফন্টগোকুল সহসা যেন অন্ধকারে আলোর রেখা দেখিতে পাইল। তাড়াতাড়ি কহিল, এ-সব বিষয়ে আমাকে আর কেন জড়ান চক্কোক্তিমশাই । মা-সরস্বতী ত স্বয়ং এসে পড়েচেন। কে কত পণ্ডিত, কার কত মান-মৰ্য্যাদা বিনোদের কাছে ত চাপা নেই— তাকেই জিজ্ঞাসা করে ঠিক করে নাও না কেন ? আমি এর মধ্যে আর হাত দেব না, চক্কোত্তিমশাই । - চক্রবর্তী কহিল, কিন্তু ছোটবাবু ত এখনো ঘুম থেকে ওঠেননি। গোকুল স্নানভাবে একটুখানি হাসিয়া কহিল, ঘুম থেকে ! তার কি আহার-নিন্দ্রে আছে ? হাবুর মাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করে দেখ, যে স্বচক্ষে দেখেচে । বলে, বড়বাৰু ছোটবাবুর মুখের পানে চাইলে আর চোখের জল রাখা যায় না—এমনি চেহারা হয়েছে। ভেবে ভেবে সোনার বর্ণ যেন কালিমাড়া হয়ে গেচে ।-বলিয়া তাহার বসিবার ঘরটা ইঙ্গিতে দেখাইয়া বলিল, গিয়ে দেখ গে—সে ঠাণ্ড মাটির উপর একলাটি চুপ করে বসে আছে। সে দেখলে কার না বুক ফেটে যায়, বল ত চকোক্তিমশাই ? চক্রবর্তী দুঃখস্থচক কি-একটা কথা অফুটে কহিয়া ফর্দ লইয়া যাইতেছিল, গোকুল, তাহাকে ফিরাইয়া ডাকিয়া কহিল, আচ্ছা, তুমি ত সমস্তুই জানে—তাই জিজ্ঞাসা あabア