পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।
শরৎ-সাহিত্য-সংগ্রহ

 জীবানন্দ। একে তুমি আজই কাছারিতে ডেকে আনিয়ে জানিয়ে দাও যে, বিঘে-প্রতি আমার দশ টাকা নজর চাই।

 এককড়ি। (সঙ্কুচিত হইয়া) আজ্ঞে, সে যে নিষ্কর দেবােত্তর, হুজুর!!

 জীবানন্দ। না, দেবােত্তর এ-গাঁয়ে একফোটা নেই। সেলামি না পেলে সমস্ত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।

 এককড়ি। আজই তাকে হুকুম জানাচ্ছি।

 জীবানন্দ। শুধু হুকুম জানানাে নয়, টাকা তাকে দু’দিনের মধ্যে দিতে হবে।

 এককড়ি। কিন্তু হুজুর...

 জীবানন্দ। কিন্তু থাক্ এককড়ি। এই সােজা বারুইয়ের তীরে আমার শান্তিকুঞ্জ না? মহাবীর, পাল্কী তুলতে বল।

[ বাহকেরা পাল্কী লইয়া প্রস্থান করিল।]

 এককড়ি। যা ভেবেচি তাই যে ঘটল রে বিশু! এ যে গিয়ে সােজা শান্তিকুঞ্জেই ঢুকতে চায়।

 বিশ্বম্ভর। নয় ত কি তােমার কাছারির খোয়াড়ে গিয়ে ঢুকতে চাইবে?

 এককড়ি। সেখানে হয়ত ঢােকবার পথ নেই। হয়ত দোর-জানালা সব চোরে চুরি করে নিয়ে গেছে, হয়ত তার ঘরে ঘরে বাঘ-ভালুকে বসবাস করে আছে—সেখানে কি আছে আর কি যে নেই, কিছুই যে জানিনে বিশ্বম্ভর!

 বিশ্বম্ভর। আমিই কি জানি না-কি তােমার দোর-জানালার খবর? আর বাঘ-ভালুকের কাছে ত আমি খাজনা আদায়ে যাইনি গাে!

 এককড়ি। এই রাতিরে কোথায় আলো, কোথায় পােকজন, কোথায় খাবার-দাবার-

 বিশ্বম্ভর। রাস্তায় দাড়িয়ে কাঁদলে লোকজন জুটতে পারে, কিন্তু আলাে আর খাবার-দাবার-

 এককড়ি। তাের কি! তুই ত বলবিই য়ে নচ্ছার পাজি ব্যাটা হারামজাদা-

[ প্রস্থান ]