সর্তী
নিৰ্ম্মলা কহিল, যেখানে হোক । তোমার সঙ্গে গাছতলায় থাকতেও আমার লজ্জা নেই।
কথাটি ভাল, এবং সতী স্ত্রীরই উপযুক্ত। কিন্তু হরিশের সর্বাদে যেন বিছুটি মাথাইরা দিল। কহিল, তোমার লজ্জা না থাক, আমার আছে। আমি গাছতলার পরিবর্তে আপাতত কোন এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে উঠব স্থির করেচি।
নিৰ্ম্মলা বলিল, তাহলে ত ভালই হ’লো। র্তার বাড়িতেও স্ত্রী আছে, ছেলে-মেয়ে আছে, আমার কোন অস্ববিধা হবে না ।
হরিশ কহিল, না, সে হবে না । বলা নেই কহ নেই, বিনা আহানে পরের বাড়ি তোমাকে নিয়ে গিয়ে আমি উঠতে পারব না ।
নিৰ্ম্মলা বলিল, পারবে না সে জানি, আমাকে সঙ্গে নিয়ে লাবণ্যর ওখানে ওঠা
যায় না ।
হরিশ ক্ষেপিয়া গেল। হাত-মুখ নাড়িয়া চীৎকার করিয়া কহিল, তুমি যেমন নোঙর তেমনি মন্দ । সে বিধবা ভদ্রমহিলা, আমি বা সেখানে যাব কেন, সেই বা আমাকে যেতে বলবে কেন ? তা ছাড়া, আমার সময় বা কই ? কলকাতায় গিয়ে পরের কাজে ত নিশ্বাস ফেলবার ফুরসং পাব না ।
পাবে গো পাবে, বলিয়া নিৰ্ম্মল! ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল । দিন-তিনেক পরে হরিশ কলিকাতা হইতে ফিরিয়া আসিলে স্ত্রী কহিল, চার-পাচ দিন বলে গেলে, তিনদিনেই ফিরে এলে যে বড় ? হরিশ কহিল, কাজ চুকে গেল, চলে এলাম। নিৰ্ম্মলা জোর করিয়া একটু হেসে প্রশ্ন করিল, লাবণ্যর সঙ্গে দেখা হয়নি বুঝি ? হরিশ কহিল, না । নিৰ্ম্মলা অতিশয় ভালোমানুষের মত জিজ্ঞাসা করিল, কলকাতাতেই যদি গেলে একবার খবর নিলে না কেন ?
হরিশ জবাব দিল, সময় পাইনি । অত কাছাকাছি গেলে, সময় একটুখানি করে নিলেই হতো। বলিয়া সে চলিয়া গেল ।
ইহার মাস-থানেক পরে একদিন আদালতে বাহির হইবার সময় হরিশ ভগিনীকে ডাকিয়া কহিল, আজ আমার ফিরতে বোধ করি একটু রাত হয়ে যাবে উমা।
কেন দাদা ?
२२*
পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
