পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ তাহার কথা শেষ না হইতেই গয়া চোখ পাকাইয়া চেঁচাইয়। উঠিল, পাটালি-গুড় কখম ইম্বরে থায় রাক্ষসী—আমার সঙ্গে চালাকি ? তোর যদি কিছু নেই, তবে কেন জামাকে ডাকলি । জ্যাঠাইমা বাহিরে জাসিয়া বলিলেন, সত্যি বলচি গয়া— গয়া লাফাইয়া উঠিয়া কহিল, তৰু বলচ সত্যি, যা—আমি তোর কিছু খেতে চাইনে, বলিয়া সে পা দিয়া টান মারিয়া সমস্ত আয়োজন উঠানে ছড়াইয়া ফেলিয়া দিয়া বলিল, আচ্ছা, আমি দেখাচ্ছি মজা, বলিয়া সে সেই চ্যালা-কাঠটা হাতে তুলিয়া ভাড়ারের দিকে ছুটিল। গঙ্গামণি ই ই করিয়া ছটিয়া গিয়া পড়িলেন, কিন্তু চক্ষের নিমিষে ক্রুদ্ধ গয়ারাম ছাড়ি-কুঁড়ি ভাঙ্গিয়া জিনিস-পত্র ছড়াইয়া একাকার করিয়া দিল। বাধা দিতে গিয়া তিনি হাতের উপর সামান্ত একটু আঘাত পাইলেন। ঠিক এমনি সময়ে শিৰু জমিদার-বাট হইতে ফিরিয়া আসিল । হাঙ্গামা শুনিয়া চীংকার-শব্দের কারণ জিজ্ঞাসা করিতেই গঙ্গামণি স্বামীর সাড়া পাইয়া কাদিয়া উঠিলেন এবং গয়ারাম হাতের কাঠটা ফেলিয়। দিয়া উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড় মারিল । শিৰু ক্রুদ্ধস্বরে প্রশ্ন করিল, ব্যাপার কি ? গঙ্গামণি কাদিয়া কহিল, গয়া আমার সর্বস্ব ভেঙ্গে দিয়ে হাতে আমার এক ঘা বসিয়ে দিয়ে পালিয়েছে—এই দেখ ফুলে উঠেচে । বলিয়া সে স্বামীকে হাতটা দেখাইল । শিবুর পশ্চাতে তাহার ছোট-সম্বন্ধী ছিল । হ’সিয়ার এবং লেখাপড়া জানে বলিয়া জমিদার-বাটতে যাইবার সময় শিৰু তাহাকে ও-পাড়া হইতে ডাকিয়া লইয়া গিয়াছিল। সে কহিল, সামন্তমশাই, এ সমস্ত ঐ ছোট-সামন্তর কারসাজি । ছেলেকে দিয়ে সে-ই এ-কাজ করিয়েচে । কি বল দিদি, এই নয় ? গঙ্গামণির তখন অস্তর জলিতেছিল, সে তৎক্ষণাৎ ঘাড় নাড়িয়া কহিল, ঠিক তাই । ওই মুখপোড়াই ছোড়াকে শিখিয়ে দিয়ে আমাকে মার খাইয়েচে । এর কি করবে তোমরা কর, নইলে আমি গলায় দড়ি দিয়ে মল্পব । এত বেল পৰ্য্যন্ত শিৰুর নাওয়া-খাওয়া নাই, জমিদারের কাছেও স্ববিচার হয় নাই, তাহাতে বাড়িতে পা দিতে না দিতে এই কাও, তাহার আর হিতাহিত জ্ঞান রহিল না। সে প্রচণ্ড একটা শপথ করিয়া বলিয়া উঠিল, এই আমি চললুম থানার দারোগার কাছে। এর বিহিত না করতে পারি ত আমি বিন্দু সামন্তর ছেলে নই। তাহার শালা লেখাপড়া-জানা লোক, বিশেষতঃ তাহার গয়ার উপর আগে হইতেই আক্রোশ ছিল । সে কহিল, আইন-মতে এর নাম অনধিকার-প্রবেশ । লাঠি নিয়ে ,酸梯●