পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বভ্রাঙ্গ-সাধনাক্স লাল্পী শাস্ত্রে ত্ৰিবিধ দুঃখের কথা আছে। পৃথিবীতে যাবতীয় দুঃখকেই হয়ত ঐ তিনটির পৰ্য্যায়েই ফেলা যায়, কিন্তু আমার আলোচনা আজ সে নয়। বর্তমান কালে ৰে তিন প্রকার ভয়ানক দুঃখের মাঝখান দিয়ে জন্মভূমি আমাদের গড়িয়ে চলেছে, সেও তিন প্রকার সত্য, কিন্তু সে হচ্ছে রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামাজিক । রাজনীতি আমরা সবাই বুঝিনে, কিন্তু এ-কথা বোধ করি অনায়াসেই বুঝতে পারি এই তিনটিই একেবারে অচ্ছেদ্য বন্ধনে জড়িত। একটা কথা উঠেছে, এক রাজনীতির মধ্যেই আমাদের সকল কষ্টের, সকল দুঃখের অবসান ! হয়ত এ-কথা সত্য, হয়ত নয়, হয়ত সত্যেমিথ্যার জড়ানো, কিন্তু এ-কথাও কিছুতেই সত্য নয় যে, মানুষের কোন দিক দিয়েই দুঃখ দূর করার সত্যকার প্রচেষ্টা একেবারে ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। ধারা রাজনীতি নিয়ে আছেন তারা সৰ্ব্বদা সৰ্ব্বকালে আমাদের নমস্ত। কিন্তু আমরা সকলেই যদি তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবার মুম্পষ্ট চিহ্ন খুঁজে নাও পাই, ষে স্বাগগুলো কেবল হল দৃষ্টিতেই দেখতে পাওয়া যায়—আমাদের আর্থিক এবং সামাজিক স্পষ্ট দুঃখগুলো —কেবল এইগুলিই যদি প্রতিকারের চেষ্টা করি, বোধ হয় মহাপ্রাণ রাজনৈতিক নেতাদের স্কন্ধ থেকে একটা মস্ত গুরুভারই সরিয়ে দিতে পারি। তোমার দীর্ঘ অবকাশের প্রাক্কালে, তোমাদের এবং আমার পরমবন্ধু শ্ৰীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র মহাশয় এই শেষের দিকের অসহ বেদনায় গোটা-কয়েক কথা তোমাদের মনে করে দেবার জন্তে আমাকে আহবান করেছেন এবং আমিও সানঙ্গে তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি। এই সুযোগ এবং সম্মানের জন্ত তোমাদের এবং গুরুস্থানীয়দের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ দিই। এই সভায় আমার ডাক পড়েছে দু’টো কারণে। একে ত মৈত্র মশাই আমার বয়সের সম্মান করেছেন, দ্বিতীয়তঃ একটা জনরব আছে, দেশের পল্লীতে পল্লীতে, গ্রামে গ্রামে আমি অনেকদিন ধরে অনেক ঘুরেছি। ছোট-বড়, উচুনীচু, ধনীনির্ধন, পণ্ডিত-মূর্ধ বহু লোকের সঙ্গে মিশে মিশে, অনেক তত্ত্ব সংগ্রহ করে রেখেছি । জনরব কে রটিয়েছে খুজে পাওয়া শক্ত, কিন্তু কথাটা ঠিক সত্য না হলেও একেবারে মিথ্যাও বলা চলে না। দেশের নবাই জন যেখানে বাস করে আছেন সেই পল্লীগ্রামেই আমার ঘর। মনের অনেক আগ্রহ, অনেক কৌতুহল দমন করতে না ৩২৩