পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5ै-नईहलने বিচারবৃদ্ধির পরে। নিজেকে কোথায় এবং কতদূরে যে দাড় করাতে হবে তার কোনও নির্দেশই পাবার জো নেই । সুতরাং ছবির perspective এবং সাহিত্যের perspective কথার দিক দিয়ে এক হলেও কাজের দিক দিয়ে হয়ত এক নয় । তা ছাড়া সাহিত্যের বর্তমান কালটা যত বড় সত্য, ভবিষ্যং কালটা কিছুতেই ঠিক অত বড় সত্য নয়। নর-নারীর যে একনিষ্ঠ প্রেমের ওপর এতকাল এত কাব্য লেখা হয়েছে, মামুযে এত তৃপ্তি পেয়েছে, এত চোখের জল ফেলেছে, সেও হয়ত একদিন হাসির ব্যাপার হয়ে যাবে। অন্ততঃ অসম্ভব নয়। কিন্তু তাই বলে তো আজ তাকে কল্পনাতেও গ্রাহ করা চলে না । একটা concrete উদাহরণ নিই। রামায়ণে রাম-রাবণের যুদ্ধের বিবরণে অনেক জায়গা জুড়ে আছে। রাক্ষসে-বাদরে মিলে কোন পক্ষ কি রকম লড়াই করলে, কে কি অস্ত্র নিক্ষেপ করলে তার কত রকমের নাম, কত রকমের বর্ণনা । কার হাত, কার পা, কার গলা কাটা গেল, তাও উপেক্ষিত হয়নি। যুদ্ধক্ষেত্রে এ ব্যাপার ছোটও নয়, তুচ্ছও নয়, এবং কবির কাছে হয়ত সেকালের লোকে ভিড় কোরে চেয়েছিল, এবং পেয়ে অকৃত্রিম আনন্দও উপভোগ করেছিল। কিন্তু আজ স্বদুর ব্যবধানে যুদ্ধক্ষেত্রের ও যুদ্ধার্থী বীরগণের যুদ্ধকৌশল অকিঞ্চিৎকর হয়ে গেছে, সাহিত্যের দূরব্যাপী perspective বলতে কি আপনি এই ধরণের জিনিসই ইঙ্গিত করেছেন ? আমি পূৰ্ব্বে কখনো নাটক লিখিনি। এখন দু’একটা লেখার ইচ্ছে হয়, কিন্তু বাধা বিস্তর। আমার উপন্যাসের বিচার পাঠকসমাজ করেন, তার প্রশস্ত ক্ষেত্র, কিন্তু নাটকের পরীক্ষক যে কে বোঝা কঠিন । থিয়েটারবালার, না বোকা দর্শকেরা—কোথায় ষে এর হাইকোর্ট তা কেউ জানে না। রামায়ণ, মহাভারত থেকে কিংবা তেমনি প্রতিষ্ঠিত টড সাহেবের রাজস্থান থেকে নাটক লিখলে পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়া যায়, কিন্তু আপনার কাছে তাড়া খেতে হয়। পরিশেষে আপনি আমার শক্তি উল্লেখ করে লিখেছেন, “তুমি যদি উপস্থিত কালের দাবী ও ভিড়ের লোকের অভিরুচিকে না ভুলতে পারো তাহলে তোমার এই শক্তি বাধা পাবে।” আপনি নানা কাজে ব্যস্ত, কিন্তু আমার ভারী ইচ্ছে হয়, আপনার কাছে গিয়ে এই জিনিসটা ঠিক মত জেনে আসি । কারণ উপস্থিত কালটাও ষে মস্ত ব্যাপার, তার দাবী মানবো না বললে, সেও যে শাস্তি দেয় । আপনি অনুমতি না দিলে আপনার সময় নষ্ট করে দিতে আমার সঙ্কোচ হয়। জামার চিঠি লেখার ধরণটা ভারি এলোমেলো—কোন কথাই প্রায় গুছিয়ে বলতে ●ፃ