পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ সামভাবেড়, ১০ই চৈত্র, ১ওe৬ (২) ভূপেন, নববর্ষের সূচনায় তোমাদের 'বেণু'কে আমি সমস্ত অণ্ডর দিয়ে আশীৰ্ব্বাদ করি । যে-জাতির সাহিত্য নেই, তাদের দারিদ্র্য যে কত বড়, এই পুরানো সত্যটা আমরা বর্তমান কালে নানা উত্তেজনায় প্রায় ভুলে যাই । তার ফল হয় এই যে, হীনতার অন্ধকার জাতীয় জীবনে নিরস্তুর গাঢ়তর হয়েই উঠতে থাকে। সমাজের মধ্যে আবর্জনা অনেক জমেছে, বেদনা ও দুঃখেরও সীমা নেই, এ-কথা আমরা সবাই জানি, কিন্তু তোমরা যে-কয়টি ছেলের দল এই ছোট কাগজধানিকে কেন্দ্র কোরে একসঙ্গে মিলেছে—তোমরা যে নর-নারীর যৌন সমস্তাকেই সকল বেনার পুরোভাগে স্থাপন করনি, এইটিই আমার সবচেয়ে আনন্ধের সেতু। পরাধীনতার দুঃখই তোমাদের সকল ব্যথার বড় হয়ে তোমাদের এই পত্রিকায় বারে বারে ফুটে ওঠে। প্রার্থনা করি, এ কাগজে এ নীতির যেন ব্যতিক্রম না হয় । সামভাবেড় (৩) পরম কল্যাণবরেষু, ভূপেন, কিছুদিন পূৰ্ব্বে তোমার চিঠি পেয়েছি। সাহিত্য নিয়েই তোমাদের সঙ্গে পরিচয়, এবং নিজের দেশকে সমস্ত মন দিয়ে ভালোবাসা এই জানি, কিন্তু কোন অপরাধে যে আবদ্ধ হয়ে আছে ভেবে পাইনে । প্রার্থনা করি, যেন অচিরে মুক্তি পেয়ে আবার কৰ্ম্মের মধ্যে, সাহিত্যের মধ্যে ফিরে আসতে পারো । ‘শেষ প্রশ্ন’ উপন্যাসটা যে তোমার এতখানি ভালো লেগেছে, এতে ভারী আনন্দ পেলাম। এর ভেতর সামাজিক অনেক প্রশ্নের আলোচনা আছে, কিন্তু সমাধানের ভার তোমাদের হাতে । ভবিস্তুতের এই সুকঠিন দায়িত্বের সম্ভাবনাই হয়ত তোমাদের এতবড় আনন্দ দিয়েছে । অথচ, আমার ধারণা এ বই বহু লোককেই নিরাশ করবে, তারা কোন আনন্দই পাবে না। একে তো গল্পাংশ নিতাস্ত কম, তাতে আবার ভেবে ভেবে পড়তে হয়, হু হু করে সময় কাটানো বা ঘুমের খোরাকের মত নিশ্চিন্তু আরামে অৰ্দ্ধেক চোখ বুজে উপভোগ করা চলে না। এ ভালো লাগবার কথা নয়। তত্ত্বও লিখেছিলাম এই ভেবে যে, কেউ কেউ তো বুঝবে, আমার তাতেই চলে যাবে। সকল প্রকার রস সকলের জন্য নয়। অধিকারী ভেদটা আমি মানি । আরও একটা কৰা মনে ছিলো, সে অতি-আধুনিক সাহিত্য। ভেবেছিলাম এইদিকে একটা ইসার রেখে যাবো । বুড়ো হয়েছি, লেখার শক্তি অস্তগতপ্রায় ஆடி