পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোড়শী

লোকসান আপনারাই জানেন, কিন্তু আমার এমন অবস্থা যে, টাকা পেলে আমার কিছুতেই আপত্তি নেই। নতুন বন্দোবস্তে আমার কিছু পাওয়া চাই। ভালো কথা, কেউ দেখ, ত রে এককড়ি আছে না গেছে? কিন্তু গলাটা এদিকে যে মরুভূমি হয়ে গেল।

 বেয়ারা। (প্রবেশ করিয়া প্রভুর ব্যগ্র-ব্যাকুল হস্তে পূর্ণ-পাত্র দিয়া) তিনি রান্না-বাড়ির ঘরগুলো দেখচেন।

 জীবানন্দ। এর মধ্যেই? ডাক্‌ তাকে। (মদ্যপান)

[ ইহার পর হইতে পূজার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করিতে লাগিল—ও পূজা শেষ করিয়া বাহির হইয়া যাইতে লাগিল—তাদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়িতে লাগিল। এককড়ি প্রবেশ করিল। ]

 জীবানন্দ। আজ যে ভৈরবীকে তলব করেছিলাম, কেউ তাঁকে খবর দিয়েছিল?

 এককড়ি। আমি নিজে গিয়েছিলাম।

 জীবানন্দ। তিনি এসেছিলেন?

 এককড়ি। অজ্ঞে না।

 জীবানন্দ। না কেন? (এককড়ি অধোমুখে নীরব) তিনি কখন আসবেন, জানিয়েচেন?

 এককড়ি। (তেমনি অধোমুখে) এত লোকের সামনে আমি সে-কথা হুজুরে পেশ করতে পারব না!

 জীবানন্দ। এককড়ি, তোমার গোমস্তাগিরি কায়দাটা একটু ছাড়। তিনি আসবেন, না, না?

 এককড়ি। না।

 জীবানন্দ। কেন?

 এককড়ি। তিনি আসতে পারবেন না। তিনি বললেন, তোমার হুজুরকে ব’লে এককড়ি, তাঁর বিচার করবার মত বিদ্যে-বুদ্ধি থাকে ত নিজের প্রজাদের করুন গে—আমার বিচার করবার জন্যে আদালত খোলা আছে।

 জীবানন্দ। (অন্ধকার-মুখে) হু। আচ্ছা তুমি যাও।

[এককড়ির প্রস্থান ]

 প্রফুল্ল, সেই যে চিনির কোম্পানীর সঙ্গে হাজার বিধে জমি বিক্রীর কথা হয়েছিল, তার দলিল লেখা হয়েচে?

 প্রফুল্ল। আজ্ঞে হয়েচে।

৩৭