পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ জীবানন্দ। তামাকের ধুয়া আপাতত: পেটে না গেলেও চলত, কিন্তু ধুয়া নয় এমন কিছু একটা পেটে না গেলে আর ত দাড়াতে পারিনে। বাস্তবিক, নেই কিছু ষোড়শী । কিছু কি ? মদ ? ¥ জীবানন্দ । (হাসিয়া মাথা নাড়িয়া ) এবারে ভুল হ’লো। ওর জন্যে অন্য লোক আছে, সে তুমি নয়। তোমাকে বুঝতে পারার যথেষ্ট স্ববিধে দিয়েচ–অ’র যা অপবাদ দিই, অস্পষ্টতার অপবাদ দিতে পারব না। অতএব তোমার কাছে যদি চাইতেই হয়, চাই এমন কিছু যা মানুষকে বাচিয়ে রাখে, মরণের পথে ঠেলে দেয় না। ডাল ভাত, মেঠাই-মগু, চিড়ে, মুড়ি যা হোক দাও, আমি খেয়ে বঁচি ! নেই ? [ ষোড়শী নির্নিমেষ-চক্ষে চাহিয়া রছিল ] জীবানন্দ । আজ সকালে মন ভালো ছিল না! শরীরের কথা তোলা বিড়ম্বনা, কারণ সুস্থদেহ যে কি আমি জানিনে ; সকালে হঠাৎ নদীর তীরে বেরিয়ে পড়লাম, কত যে হাটলাম বলতে পারিনে—ফিরতে ইচ্ছাই হ’লো না । সূৰ্য্যদেব অস্ত গেলেন, একলা জলের ধারে দাড়িয়ে কি যে ভালো লাগল বলতে পারিনে। কেবল তোমাকে মনে পড়তে লাগল। মনে পড়ল আমার কাছারি বাড়িতে এতক্ষণে লোক জমেচে —তোমাকে নিৰ্ব্বাসনে পাঠাবার ব্যবস্থাটা আজ শেষ করাই চাই । ফিরে এসে সভায় যোগ দিলাম, কিন্তু টিকতে পারলাম না । একটা ছুতো করে পালিয়ে এসে দাড়ালাম ওই মনসা গাছটার পিছনে । ষোড়শী । তার পরে ? জীবানন্দ । দেখি দাড়িয়ে সাগর সর্দার এবং তুমি । আলাপ-আলোচনা সমস্তই কানে গেল, তাৎপৰ্য্য গ্রহণ করতেও বিলম্ব হ’লে না। ভাবলাম, আমাদের মত সাধু ব্যক্তিরা যে এ হেন নিৰ্ব্বোধ ভৈরবীকে দূর করে দিতে চেয়েচে সে ঠিকই হয়েচে । সে-রাত্রে বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশ পিয়াদা হাত-কড়া নিয়ে হাজির, সামান্য একটা মুখের কথার জন্য স্বয়ং ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব পৰ্য্যন্ত কি পীড়াপীড়ি—আর তুমি বললে কিনা আমি নিজের ইচ্ছেয় এসেচি! আর ছোট্ট একটুখানি হুকুমের জন্যে সাগরটাদের কত অনুনয়-বিনয়, কি সাধাসাধি—আর তুমি বলে বসলে কি-না অমন কথা মুখেও আনিসনে বাবা। অভিমানে বাবাজীবন মুখখানি মান করে চলে গেলেন সে ত স্বচক্ষেই দেখলাম। মনে মনে সাষ্টাঙ্গে প্ৰণিপাত করে বললাম, জয় মা চণ্ডীগড়ের চওঁী ! তোমার এই অধম সন্তানের প্রতি এত কৃপা না থাকলে কি আর এই মেয়েমানুষটির বায় বার এমন করে বুদ্ধি লোপ কর । এখন একবার একে & e