পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ এখন অন্ধ, কারবার গিয়ে পড়েচে ভাইপোদের হাতে—কিন্তু দেবে একদিন নিশ্চয়ই। সে আমি জানি। কেন-না ফাকি দিতে তাদের আমি দেবো না। নন্দ সাকে वांशि छूजिनि । কি করবে—নালিশ ? ই, আর কোন উপায় যদি না পাই ? ব্ৰজবাবু হাসিয়া বলিলেন, মেজাজটি দেখচি এক তিলও বদলায়নি। কেন বদলাবে ? মেজাজ তোমারই বদলেচে নাকি ? দুঃসময় কার বেশি তোমার চেয়ে । কিন্তু কাকে ফাকি দিতে পারলে ? আমার মতো কৃতন্ত্রের ঋণও শেষ কপদক দিয়ে শোধ করে দিলে। তাদেরও তাই করতে হবে, শেষ কড়িটা পৰ্য্যন্ত আদায় দিয়ে তবে তারা অব্যাহতি পাবে। তাদের ওপর তোমার এত রাগ কিসের ? রাগ তো নয়, আমার জালা । তোমাকে ভাই ঠকালে, বন্ধু ঠকালে, আত্মীয়-স্বজন, কৰ্ম্মচারী, স্ত্রী পৰ্য্যন্ত তোমাকে ঠকাতে ছাড়লে না । এবার আমার সঙ্গে তাদের বোঝাপড়া। তোমার নতুন কুটুম্বর আমাকে চেনে না, কিন্তু তার চেনে! ব্ৰজবাবুর বহুদিন পূর্বের কথা মনে পড়িল, তখনও একবার ডুবিতে বসিয়াছিলেন। তখন এই রমণীই হাত ধরিয়া তাহাকে ডাঙায় তুলিয়াছিল। বলিলেন, ই, তারা বেশ চেনে। নতুন-বোঁ মবেচে জেনে যারা স্বস্তিতে আছে তারা একটু ভয় পাবে। ভাববে ভূতের উপদ্রব ঘটলো। হয়তো গয়ায় পিণ্ডি দিতে ছুটবে। সবিত কহিলেন, তারা যা ইচ্ছে করুক ভয় করিনে। শুধু তুমি পিণ্ডি দিতে না ছুটলেই হোলো—ঐখানেই আমার ভাবনা । নিজে করবে না তো সে কাজ ? ব্ৰজবাবু চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন । উত্তর দিলে না যে ? ব্ৰজবাবু আরও কিছুক্ষণ র্তাহার মুখের প্রতি নীরবে চাহিয়া রহিলেন। অপরাহ সূর্ঘ্যের কতকটা আলো জানালা দিয়ে মেঝের উপর রাঙা হইয়া ছড়াইয়া পড়িয়াছিল, তাহার প্রতি সবিতার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন, এর মতোই আমার বেলা পড়ে এলো নতুন-বোঁ, পাওনা বুঝে নেবার আর সময় নেই। কিন্তু তুমি ছাড়া সংসারে বোধ হয় আর কেউ নেই যে বোঝে আমি কত ক্লান্ত । ছুটির দরখাস্ত পেশ করে বসে আছি, মঞ্জুরি এলো বলে । যা নিয়েচি, যা দিয়েছি, তার হিসেব-নিকেশ হয়ে গেছে। হিসেব ভালো হয়নি জানি, গোজামিল অনেক রয়ে গেছে, কিন্তু তবু তার জের টানতে আর আমি পারবো না । তোমার এ অনুরোধ ফিরিয়ে নাও । সবিতা একদৃষ্টি চাহিয়া শুনিতেছিলেন স্বামীর কথাগুলি, শেষ হইলে শুধু জিজ্ঞাসা করিলেন, সত্যিই কি আর পারবে না মেজ কৰ্ত্ত ? সত্যিই কি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েচো ? به هلا