পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'Sty* পরদিন যখন রাধালের ঘুম ভাঙিল বেলা অনেক হইয়া গিয়াছে। ফেরিওয়ালার উচ্চ হাকে গলি মুখরিত। দেওয়ালের ঘড়ির দিকে তাকাইয়া রাখাল একটু লজ্জিতভাবে উঠিয়া পড়িল। মূখ-হাত ধোওয়া হইলে কামাইবার সরঞ্জাম বাহির করিয়া পরিপাটিরূপে দাড়ি কামাইয়া ফেলিল। ফর্স ধুতি-পাঞ্জাবি ৰাছির করিয়া জামকাপড় বদলাইয়া লইল । মনোযোগের সহিত চুল ব্রাস করিতে করিতে চা-পিপাসায় ঘন ঘন তাহার হাই উঠিতে লাগিল। হাসিয়া স্টেভিটির পানে তাকাইয়া রাখাল মৃদুকণ্ঠে কহিল, তোমার এ-বেলা ছুটি । খুটিনাটি কাজ-কৰ্ম্ম যথাসম্ভব দ্রুতহস্তে সম্পন্ন করিয়া বাৰ্মিশ-করা ঝকঝকে জুতা জোড়া পরিত্যক্ত ময়লা রুমালে সযত্নে ঝাড়িয়া পায়ে দিবার উদ্যোগ করিতেছে, এমন সময়ে বাহির হইতে পিওন হাকিল-টেলিগ্রাম— রাখাল জুতা ফেলিয়া রাখিয়া উৎসুক আগ্রহে ছুটিয়া আসিল । সহি করিয়া দিয়া টেলিগ্রাম খুলিয়া পাঠ করিতে করিতে দুর্ভাবনায় মুখ তাহার অন্ধকার হইয়া উঠিল। ব্ৰজবাব বিশেষ পীড়িত। রেন্থ তাহাকে সত্বর যাইতে অনুরোধ করিয়াছে। টেলিগ্রামখানি হাতে লইয়া অল্পক্ষণ দ্বিধাগ্রস্তভাবে সে ঘরের মধ্যে দাড়াইয়া রছিল। ভাবিতে লাগিল সারদার সহিত আজ আর দেখা করিতে যাইবে কি-না। টাইম-টেবল বাহির করিয়া ট্রেনের সময় দেখিয়া ফেলিল। বেলা ন’টায় একটা ট্রেন আছে বটে, কিন্তু তাহ ধরিতে পারা যাইবে না। এখন সাতে-আটটা। বেদান আঙুর কমলালের প্রভৃতি ফলমূল এবং রোগীর প্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্যসামগ্ৰীও কিছু কিনিয়া লইতে হুইবে সুতরাং ন’টার ট্রেন পাওয়া অসম্ভব। পরের ট্রেন বেলা সাড়ে বারোটায়— যথেষ্ট সময় রহিয়াছে। দ্বারে তালা বন্ধ করিয়া রাখাল চিভিতমুখে সারদার সহিত দেখা করিতে চলিল। কলিকাতা ত্যাগ করিয়া বাইরে যাইবার পূৰ্ব্বে একবার তাহাকে জানাইয়া যাওয়া উচিত। ইচ্ছা, সেইখানেই সত্বর চা পান করিয়া ফিরিবার মুখে প্রয়োজনী সামগ্ৰীগুলি কিনিয়া লইয়া সাড়ে-বারোটার ট্রেনে রওনা হুইবে । সারদার বাসায় পৌঁছিয়া রাখাল দেখিল রোয়াকে মাছুর পাতিয়া সারদা চারপাচটি ছোট ছোট ছেলে-মেয়েকে পড়াইতেছে । কেহ শ্লেটে লিখিতেছে, কেহ বানান 9)

  • ३--९९