পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ জাম্বাত করিল। তাহার মনে হইতে লাগিল নতুন-মা বোধহয় তাহারই অন্তঃকরণের সহিত তুলনা করির রাজুর সম্বন্ধে এই কথা বলিলেন। তাছার মুখ হইয়া উঠিল অন্ধকার, বাক্য হইয়া গেল নিস্তব্ধ। সবিতা তাহা লক্ষ্য না করিয়াই বিগলিতকণ্ঠে বলিতে লাগিলেন, রাজুর কৰা যখন ভাবি তারক, তখন মনে হয়, আমার রাজু বেশি স্নেহের ধন, না রেণু ? রাজু আর রেৎ ওদের দুজনের মধ্যে কে বেশি আর কে কম আমি ঠিক করে উঠতে পারিনে । তারক বলিয়া উঠিল, নিজের অস্তর তা হলে এখনও আপনি চেনেননি মা। রেণুর সঙ্গে রাজুর কোন তুলনাই হতে পারে না । সবিতা বলিলেন, কেন বলে তো ? রাজুকে আপনি যতই আপন সস্তানের তুল্য ভাবুন না কেন, তবু সেটা আপন সম্ভানের তুলাই থেকে যাবে। তুল্য বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ আপন সস্তান হয়ে উঠবে না, উঠতে পারেও না। সবিতা বলিলেন, সকল ক্ষেত্রে সব ব্যাপার একরকম হয় না তারক। তা জানি মা। তবু বলি শুনুন। আপনি নিজেই বিচার করে দেখুন, আপনার অস্তরের স্নেহাধিকারে রেণু আর রাজুর সমান দাবি যতই থাক্ না, পার্থক্য ষে কত বেশি তা দেখিয়ে দিচ্চি। ধরুন, আপনার এই হরিণপুরে আসা। রওনা হবার আগের রাত্রে গুনলাম, রাখাল আপনাকে নিষেধ করেছিল হরিণপুরে আসতে। আপনি নাকি বলেছিলেন—ছেলে বড় হলে তার সম্মতি নেওয়া দরকার। তাই গুনে সে অসম্মতিই জানিয়েছিল, আপনি তা ঠেলে এলেন আমার এখানে। কিন্তু মা, রেণু যদি আপনার এখানে আসার এতটুকু অনিচ্ছার আভাসমাত্র জানাতো, আপনি হরিণপুরে আসা তখনই বন্ধ করে দিতেন নিশ্চয়। সবিতা একটু চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলেন, আমি জানতাম তারক, রাজু কেবলমাত্র অভিমান বশে রাগ করেই আমাকে আসতে নিষেধ করেছিল । ওটা তার তর্ক বা জেদ মাত্র। সত্যি-সত্যিই যদি আমাকে এখানে পাঠাবার তার অনিচ্ছা থাকতো, তা হলে আমি কখনই আসতে পারতাম না বাবা । কিন্তু ধরুন, রেণু যদি কেবলমাত্র জেদ কিংবা তর্ক করেই আপনাকে কোনখানে বেতে নিষেধ করতো, আপনি তার সেই তর্ক ও জেদের খাতির না রেখে পারতেন কি মা ? সবিতা মৌন হুইয়া রছিলেন। বহুক্ষণ পরে ধীরে ধীরে বলিলেন, তুমি ঠিকই বলেচ তারক। মাস্থ্য নিজের অস্তরকেই বোধ হয় সবচেয়ে কম চেনে। তবে একটা কৰা। রাজু আমার কাছে রেণুর বাড়া না হতে পারে, আমি কিন্তু রাজুর কাছে 》*翰