পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अंग्रं९-जांश्छि)-ज९८वह পরিপূর্ণ যৌবনের উচ্ছসিত বসন্তদিনে যখন জীবন স্বতঃই আনন্মপিপাসাঙুর, তাহাকে সেদিন উহা সম্পূর্ণ একাকী নিঃসঙ্গ বহন করিতে হইয়াছে। না মিলিয়াছে অস্তরের অন্তরঙ্গ সার্থী, না পাইয়াছেন যৌবনের প্রাণবন্ত সহচর। সেই একান্ত একাকীত্বের মাঝে হঠাৎ একদিন কোথা হইতে কি যে আকস্মিক বিপ্লব হইয়া গেল তাহা নিজেও স্পষ্ট বুঝিতে পারেন নাই। যখন চৈতন্ত হইল, আশে-পাশে চাহিয়া দেখিতে পাইলেন, সমগ্র বিশ্বসংসারে তাহার কেহ নাই, কিছু নাই। স্বামী, সন্তান, গৃহ-পরিজন, সংসার-প্রতিষ্ঠা, মানমর্য্যাদা সমস্তই ঐন্দ্রজালিকের ভোজবাজির স্থায় অন্তহিত হইয়া গিয়াছে। ভয়চকিত-চিত্তে সহসা অনুভব করিলেন, সংসার ও সমাজের বাহিরে নির্বান্ধব নিরবলম্বন তিনি, এক শূন্তের মধ্যে দুলিতেছেন। পা রাখিয়া দাড়াইবার মতো মাটিটুকুও পায়ের নীচে আশ্রয় আর নাই। জীবনের এই আকস্মিক সৰ্ব্বনাশের ক্ষণে যে অতিপঙ্কিল আশ্রয়ভূমির সঙ্কীর্ণতম পরিধির মধ্যে নিজেকে দাড় করাইয়াছেন, তাহ সামাজিক জ্ঞানবুদ্ধি বিবেচনার সম্পূর্ণ অগোচরে। কেবলমাত্র জৈব প্রকৃতির স্বাভাবিক আত্মরক্ষার প্রবৃত্তিবশেই জীবনধারণের অনিবাৰ্য্য প্রয়োজন ; কিন্তু দিন যাইবার সঙ্গে সঙ্গে সেই কলুষিত আশ্রয়ের ক্লেদ ও কাৰ্য্যতায় তাহার দেহ মন প্রতিদিন ঘৃণায় সঙ্কুচিত হইয়া উঠিয়াছে, জাগ্রত আত্মচেতনা প্রতিমুহূর্বে অনুতাপের মর্শ্বাস্তিক আঘাতে আহত ও জর্জরিত হইয়াছে। তবুও এই অসহ ও অবাঞ্ছিত সঙ্কীর্ণ আশ্রয়টুকু ত্যাগ করিয়া আরও অনিশ্চিতের মধ্যে বাপ দিতেও ভরসা পান নাই। নিজের একান্ত নিরুপায় অবস্থা বুঝিতে পারিয়া অস্তরে অস্তরে শিহরিয়া উঠিয়াছেন। এমনি করিয়াই তাহার দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর নিয়ত-অস্বস্তির মধ্যে কাটিয়া গিয়াছে। জীবনের প্রারম্ভক্ষণে বলিষ্ঠ প্রাণবস্ত পুরুষ কেহ যদি তাহার জীবনের পথে আসিয়া দাড়াইতেন, আজ র্তাহার উজ্জল নারীজীবনের দীপ্তিতে সংসার ও সমাজ আলোকিত হইয়া উঠিত না কি ? প্রসন্ন দেহ-মনের, আনন্দিত হৃদয়ের অমুকুল জাৰেটন প্রভাবে তিনি কি আজ লক্ষ্মীস্বরূপিণী পত্নী, আদর্শ জননী, মমতা মাধুৰ্য্যময়ী নারী হইয়া উঠিতে পারিতেন না ? কিসের জন্ত র্তাহার জীবনের উদয়-উষা এমন অকাল কুঙ্কটিকায় বিলীন হইয়া গেল ? মুহূর্তের অবকাশে এতবড় প্রলয় কেমন করিয়া সংঘটিত হইল, যাহা তাহার নিজেরই স্বপ্নের অগোচর। সবিতার এই অবাধ অশ্রুনিষিক্ত চিন্তাধারায় সহসা বাধা পড়িল । স্বারে ঘন ঘন করাঘাতের সহিত তারকের কণ্ঠস্বর শোনা গেল—নতুন-মা—নতুন-মা—একবার দ্বোরটা খুলুন— সবিতা উঠিয়া বসিয়া নিজেকে একটু সম্ব,ত করিতে-না-করিতে দ্বারে পুনঃ পুনঃ আঘাত ও উপধুপিরি ব্যগ্র ডাক শোনা যাইতে লাগিল। ቈ( 8