পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ তার মানে, আপনি বলতে চাইচেন, রেণুর অদৃষ্টে যা আছে তা হবেই? আমাদের দুশ্চিন্তা নিরর্থক । নয় তো কি ? ওর ভাগ্যবিড়ম্বন তে৷ শৈশবেই শুরু হয়েছে ওর জীবনে। তুমি আমি কেন, দেশ-শুদ্ধ লোক এখন ওকে মুখে রাখবার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হবে i এই কি আপনার অন্তরের যথার্থ বিশ্বাস দেবতা ? হ্যা। অনেক হোচট খেয়ে এই-ই এখন আমি শেষ বুঝেচি। সারদা স্তব্ধ হইয়া রহিল। বহুক্ষণ পরে দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিল, মা কিন্তু এটা সন্ধ করতে পারবে বলে মনে হয় না । তার মানে ? ' আপনি যাই বলুন দেবতা, সারদাকে ভোলাতে পারবেন না। জোর করে নিষ্ঠুর সাজতে যাওয়া আপনার মতো মামুষের সাধ্য নয়। সমস্তই আপনি জানেন, বোঝেন । আপনার জ্ঞানের কাছে আমার জ্ঞান-বুদ্ধি তুচ্ছ। রেণুর আজকের অবস্থার জন্ত তার নিজের মা-ই দায়ী ; কিন্তু যা এই সংসারে বহু মানুষেরই জীবনে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঘটে যায়—তার কি কোনও জবাবদিহি আছে ? নিজেই সে কি খুঁজে পায় তার অর্থ ? রাখাল ভাবহীন শূন্ত দৃষ্টিতে সারদার পানে তাকাইয়া রহিল। সারদা ধীরে ধীরে বলিতে লাগিল, তবুও ভেবে দেখুন, সেদিনের মা আর অাজকের মা এক মানুষ নন। উভয়ের মধ্যে অনেক প্রভেদ । আর যে-কেউ যাই বুকুক না কেন দেবতা, মায়ের নতুন-মা পরিচয়টা আপনার চেয়ে ভাল, আপনার -চেয়ে বেশী জার কে জানে । নিরুত্তরে রাখালের মুখে চোখে নিগুঢ় বেদনার বিষণ্ণতা নামিয়া আসিয়াছিল। সারদা অত্যন্ত মৃদু-কণ্ঠে বলিল, মার পানে আর চাওয়া যায় না আজকাল। কি মানুষ কি হয়ে যাচ্চেন দিনের পর দিন । ভিতরে ভিতরে অহরহ তুষের আগুনে পুড়ে পুড়ে দেহ-মন তার খাক হয়ে গেল। খাওয়া ছেড়ে, পরা ছেড়ে, সংসারের অনাবগুৰু কাজে দাসী-রাসুনীর বাড়া খাটুনি খেটে-মেয়ের ভাবনা ভেবে ভেবে দেহপাত করে ফেলেচেন, তবুও একবিন্দুও শাস্তি পাচ্ছেন না একদওও । রাখাল উদাস নেজে উঠানের দিকে তাকাইয়া রহিল, কথা কহিল না। সারদা বলিল, মায়ের উপর আপনি অবিচার করবেন না। আপনিও যদি অভিমানে মাকে ভূল বোঝেন তা হলে পৃথিবীতে সত্যের পরে যে আর নির্ভর চলবে না । মানুষ বঁাচে কিসে ? + * রাখাল দৃষ্টি নত করিল। কি বলিবে খুজিয়া পাইল না। জবাব দিবার ছিলও न किडू । .* $ - | 1 , , ; २३°