পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় ভয় নেই। জীবনে একমাত্র নিজেকে ফাকি দেওয়া ছাড়া আর কাউকে দিয়েটি বলে তো মনে পড়ে না। সবিতার কণ্ঠস্বর র্কাপিয়া উঠিল। * ' , বিমলবাবু লক্ষ্য করিলেন, সবিতা জাজ সহজ পরিহাসের উত্তরেও কি যেন গুরু । বেদনায় গভীর হইয়া উঠিতেছিল। ইহা যে তাহার অন্তগূঢ় কোনও একটা বিক্ষোভেরই বহিলক্ষণ, ইহা বুঝিতে ভূল হইল না। তাই আর কোনও কখা না কহিয়া বিকালেই আসিবেন বলিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন । সন্ধ্যার কিছু পূৰ্ব্বে বিমলবাবু যখন আসিলেন, সবিতা এবেলার রন্ধন শেষ করিয়া সন্ধ্যাস্নান সমাপনাস্তে পরিচ্ছন্নবাসে তেতলার ছাদে একখানি ডেক্‌-চেয়ারে বসিয়াছিলেন। সামনে আর একখানি চেয়ার পাতা। শুভ্র আবরণে ঢাকা একটি ছোট টিপয়ের উপর স্বচ্ছ কাচের মাসে চাপা দেওয়া পরিষ্কার পানীয় জল, সম্ভ ঢাকনি খোলা এক-টিন বিলাতি সিগারেট, যে ব্রাণ্ডের সিগারেট বিমলবাবু সৰ্ব্বদা ব্যবহার করেন। টিপয়ের পরে একবাক্স নূতন দেশলাই ও ছাই ঝাড়িয়া ফেলিবার একটি পিতলের ঝকঝকে ক্ষুদ্র আধার। বিমলবাবু আসিয়া দাড়াইলে, মৃণালদণ্ডের মত দেহলতা নত করিয়া সবিতা বিমলবাবুর দুই পায়ে হাত ঠেকাইয়া প্রণাম করিলেন। কি পাগলামি— আয়ত চক্ষু দুইটি উজ্জল করিয়া সবিতা বলিলেন, পাগলামি নয়, তোমার প্রধান প্রশ্নের উত্তর যে আমার এই । প্রভাতে করেছি আমন্ত্রণ, সন্ধ্যায় নিবেদন কয়লাম প্ৰণাম। আর আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবে না তো দয়াময় ? 3. সবিতার কণ্ঠস্বরে এমনই এক অশ্রুতপূৰ্ব্ব মাধুর্য্য ক্ষরিত হইল যে, বিমলবাবু আহ্মণ অভিভূতের ন্যায় দাড়াইয়া রহিলেন। মনে হইল, এ যেন তাহার পূর্ব পরিচিত সে-সবিতা নয়, যে অসহায়কে তিনি রমণীবাবুর স্থসজ্জিত অট্টালিকায় দিনের পর দিন নিগুঢ় বেদশায় মৌন ছায়াতলে বিষ প্রতিমার মত বারংবার দেখিয়াছেন। আজও সকালে রান্নাঘরের সম্মুখে যাহার মান ক্লিষ্ট মূৰ্ত্তি দেখিয়া বুকের মধ্যে বেদনা মোচড় দিয়া উঠিয়াছিল—এ যেন সে সবিতাও নয়। স্থগৌর শীর্ণযুখে একটি প্রশান্ত কোমল মেম্বরতা। সে মুখে হৃদয়াবেগের আতিশষ্যজনিত উচ্ছ্বাসীপ্তি নাই, সলজ প্রেমিকের প্রণয়স্কলভ সরমরাগের রক্তিমাভা নাই । স্বকুমার ওyাধৱে প্রতিষ্কিন্ধ সংঘত হাস্তের মাধুৰ্য্যময় স্বযমা। বিবাদ-শাভ নয়ন যুগলে বিচ্ছুরিত হইতেছে স্বৰূপ্রেসারিত দৃষ্ট । সকল অঙ্গভঙ্গির খোয় ৰেখা । ኧ¢