পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় এক প্লেট গরম কচুরী জানিয়া রাখালের সামনে ধরিয়া দিল। তারক হাসিয়া বলিল দেখলে তো ? একেবারে ডজন হিসেবে এসে গেছে । - রাখাল মৃদ্ধ হাসিয়া শিবুর মাকে উদ্দেশ করিয়া বলিল, আমি তো রাক্ষস নই বাছা! এতগুলো কচুরী এনেচে কেন ? তা এনেচে যখন, খাচ্ছি সবগুলিই । কিন্তু কচুরী তুমি বাপু ভালো তৈরী করতে পারোনি, বুঝলে ? যা ঝাল দিয়েচো— পেটের ভিতর পর্য্যস্ত জালা করচে। একটু ঝালটা কম দিলেই ভালো করতে। শিবুর মা অবগুণ্ঠনটি আরও খানিক টানিয়া লজ্জায় মাথা হেঁট করিয়া অফুটকণ্ঠে কহিল, কচুরী তো আমি তৈরী করিনি। দিদিমণি করেচেন । ও! তাই কচুরীতে এত ঝাল। তারককে লইয়া রাখাল যখন পার্কে গিয়া বসিল, অপরাহ্ল হইয়াছে । তারক বলিল, বহুদিন বাদে তোমার সঙ্গে পার্কে বেড়াতে আসা হলো আজ । প্রত্যুত্তরে রাখাল একটু শুষ্ক হাসিল। তারক তাহা লক্ষ্য করিয়া মনে মনে ঈষৎ অস্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করিলেও বাহিরে সহজভাব বজায় রাখিয়া বলিল, হ্যা, কি বলবে বলছিলে ? বিমলবাবুর কাছে তুমি কি শুনেচে আমার সম্বন্ধে ? রাখাল বলিল, শুনেচি তুমি খুব ভালো কাজকৰ্ম্ম করচে। তোমার ভবিষ্যৎ অতিশয় উজ্জ্বল। তোমার মত উদ্যোগী ও পরিশ্রমী যুবার জীবনে উন্নতি অনিবাৰ্য্য। রাখালের কণ্ঠে বিদ্রুপের স্বর না থাকিলেও তাহার বলিবার ভঙ্গিতে তারক উহাকে উপহাস বলিয়াই মনে করিল। ভিতরে ভিতরে জলিয়া গেলেও বাহিরে শাস্তভাবেই বলিল, তোমাকে ডেকে বিমলবাবুর হঠাৎ এ-সব কথা বলার মানে কি ? তা কি করে জানবো । তারক গম্ভীর হইয়া পড়িল। জিজ্ঞাসা করিল, তোমার আর কিছু বলবার আছে কি ? রাখাল বলিল, আছে । সেটা বলে ফেলো । বিকাল-বেলায় নিশ্চিস্ত হয়ে বসে পার্কে হাওয়া খাওয়ার উপযুক্ত বড়মাহুষ আমি নই। দেখেইচ তো তুমি, কাজ ফেলে রেখে উঠে এসেচি। তারকের উন্মায় রাখাল হাসিল। বলিল, ওকালতি পেশা যাদের, তাদের অতো অধৈৰ্য্য হতে নেই হে। একটু থামিয়া পুনরায় বলিল, একটা গুরুতর বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্তই তোমাকে এখানে ডেকে আনলাম তারুক ! তারক নিৰ্ব্বাক রহিল । রাখাল গভীর-মুখে বলিল, তোমার বিয়ের প্রস্তাব এনেচি। রাখালের মুখের পানে তীক্ষ দৃষ্টিতে চাহিয়া তাৱক বলিল, পরিহাস করচে । ३६ > لاجلاحسart لا