পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ছোটগল্পী লোকটি নেহাত খারাপ নয়। একটু নিৰ্ব্বোধ, সাদালিয়া জারামপ্রিয় মানুষ । সূক্ষভাবে কোনও কিছু বুঝিতে বা উপলব্ধি করিতে পারেন না । ছোটগিী বলিলেন, দাদার মোটে মত নয় আমি বৃন্দাবনে থাকি । এই কয়েকদিনের জন্য এখানে এসেচি কত তার হাতে-পায়ে ধরে। ওঁকে নিয়ে যাওয়াই কিন্তু আমার পক্ষে সব দিক দিয়ে সুবিধা । সবিতা বলিলেন, তা জানি ; কিন্তু সেটা ওঁর নিজের পক্ষে ষে খুবই चशविधांश्व । ছোটগল্পী বলিলেন, উনি যদি আমার সঙ্গে না যান, এখানে ওঁর দেখাশুনা করবে কে ? আমার তো কালকের মধ্যে ফিরতেই হবে। সবিতা বলিলেন, যখন তোমরা কেউই ওঁর আপনার ছিলে না, ওঁকে চিনতেও না, তখন যে-লোক ওঁর সব-কিছু দেখাশোনার ভার নিয়ে থাকতো, সেই লোকই ওঁর ভার নিয়েচে ! তোমার দাদাকে বলে । ছোটগিী বিন্মিত হইয়া বলিলেন, তিনি কে ? তুমি চিনবে না ভাই, তোমার দাদাকে বললে তিনি ঠিক চিনবেন। ছোটগল্পী বোনপোর সহিত কলিকাতায় ফিরিয়া গেলেন। বিমলবাবুও সিঙ্গাপুরে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করলেন। যাত্রার পূৰ্ব্বক্ষণে সবিতা আসিয়া প্ৰণাম করিলেন। শোকণীর্ণ সবিতার পানে চাহিয়া বিমলবাবু অস্ফুট কি শুভকামনা করিলেন বোঝা গেল না। সবিতা মৃদুকণ্ঠে অপরাধীর মতোই বলিলেন, তুমি আমাকে ভুল বুঝে না । জীবনে স্বারে বারে আশ্রয়-ভ্ৰষ্ট হওয়াই বোধহয় আমার নিয়তি । বিমলবাবুর বৃহৎ মোটর বৃন্দাবনের রক্তিম ধূলিজালে দিক আচ্ছন্ন করিয়া সবিতার দৃষ্টির অন্তরালে অদৃপ্ত হইয়া গেল। স্তব্ধমূৰ্ত্তি সবিতার রক্তলেশহীন মুখের পানে চাহিয়া স্বাখাল ভীতকণ্ঠে ডাকিল, মা-মা—নতুন-মা – রাখালের আহ্বানে দৃষ্টি ফিরাইয়া সবিতা অকস্মাৎ উচ্ছ্বসিত ক্রননে মাটিতে দুটাই পড়িলেন। বলিলেন, রাজু, আমার রেণু যখন আমাকে ক্ষমা করেনি, তখন বেশ জেনেচি, সংসারে কারো কাছেই আমি ক্ষমা পাবো না । মাস-খানেক পরে এডেন বন্দরের পোস্ট অফিসের মোহরাঙ্কিত একখানি পত্র সবিতার নামে বৃন্দাবনে আসিল। বিমলবাবু লিখিয়াছেন— রেণুর মা, তোমার দেশ-ভ্রমণ শেষ হইয়াচে । আমি পৃথিবী-ভ্রমণে চলিয়াছি। তোমার প্রতি বিন্ধুমাত্র দুঃখ বা ক্ষোভ অন্তরে রাখিয়াছি, এ সন্দেহ করিও না । সমস্ত জীবন, ቁግመ