পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় । স্বরে কহিল, প্রশ্নটা শুধু বাংলা নয় মা-হোলো অন্যায়। নতুন-মার মেয়ে দেখতে কেমন হওয়া উচিত এ কি আপনি জানেন না ? তবে রঙটা বোধহয় একটুখানি বাপের ধার ঘেসে গেছে—ঠিক স্বর্ণ-চাপ বলা চলে না। বলুন, তাই কি নয় নতুন-মা ? y মেয়ের কথায় মায়ের দুই চোখ ছল ছল করিয়া আসিল ; দেওয়ালের ঘড়ির দিকে একমুহূৰ্ত্ত মুখ তুলিয়া বলিলেন, তোমাদের বার হবার সময় বোধ হয় হয়ে এলো । না, এখনো ঘট দুই দেরি । - তারক গোড়ায় দুই-একটা ছাড়া আর কথা কহে নাই, উভয়ের কথোপকথন মন দিয়া শুনিতেছিল। যে অজানা মেয়েটির অশুভ, অমঙ্গলময় বিবাহ-সম্বন্ধ ভাঙিয়া দিবার সঙ্কল্প তাহারা গ্রহণ করিয়াছে, সে কেমন দেখিতে জানিতে তাহার আগ্রহ ছিল, কিন্তু ব্যগ্রতা ছিল না ; কিন্তু এই যে রাখাল বর্ণনা করিল না, শুধু অম্বুযোগের কণ্ঠে মেয়েটির রূপের ইঙ্গিত করিল, সে যেন তাহার অন্ধকার অবরুদ্ধ মনের দশদিকের দশখানা জানালা খুলিয়া আলোকে আলোকে চকিতে চঞ্চল করিয়া দিল i এতক্ষণ সে যেন দেখিয়াও কিছু দেখে নাই, এখন মায়ের দিকে চাহিয়া অকস্মাৎ তাহার বিস্ময়ের সীমা রহিল না। - নতুন-মার বয়স পয়ত্রিয়-ছত্রিশ। রূপে খুত নাই তা নয়, স্বযুখের দাত-দুটি উচু, তাহা কথা কহিলেই চোখে পড়ে। বর্ণ সত্যই স্বর্ণ-চাঁপার মতে, কিন্তু হাত পায়ের গড়ন ননী-মাখনের সহিত কোনমতেই তুলনা করা চলে না। চোখ দীর্ঘায়ত নয়, নাকও বাণী বলিয়া ভূল হওয়া অসম্ভব ; কিন্তু একহারা দীর্ঘচ্ছন্দ দেহে সুষমা ধরে না ? কোথায় কি আছে না জানিয়া অত্যন্ত সহজে মনে হয় প্রচ্ছন্ন মর্যাদার এই পরিণত নারী-দেহটি যেন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আর সবচেয়ে চোখে পড়ে নতুনমার আশ্চৰ্য্য কণ্ঠস্বর। মাধুৰ্য্যের যেন অন্ত নাই। : তারকের চমক ভাঙিল নতুন-মার জিজ্ঞাসায়। তিনি হঠাৎ যেন ব্যাকুল হইয় প্রশ্ন করিলেন, রাজু, তোমার কি মনে হয় বাবা, এ বিয়ে বন্ধ করতে পারবে ? مره সে-কথা তো বলা যায় মা মা ! * , তোমার কাকাবাবু কি কিছুই দেখবেন না ? কোন কথাই কানে তুলবেন না ? ' ' রাখাল বলিল, চোখ-কান তো তার আর নেই মা। তিনি দেখেন মামাবাবুর চোখে, শোনেন গিনীর কানে। আমি জানি এ বিয়ের সম্বন্ধ তারাই করেচেন। " কর্তা তবে কি করেন ? যা চিরদিন করতেন—সেই গোবিন্দজীর সেবা। এখন শুধু তার উগ্রতা বেড়ে গেছে শতগুণে। দোকানে যাবারও বড় সময় পান না। ঠাকুর-ধর হতে বার হতেই e 总》