পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় ই। এ কি তুমি ডেকে পাঠিয়েচে যে, জোর করে রাগ করে, বলবো, এখন যাবার সময় নেই, তুই যা ? অামাকে যেতেই হবে। যাকে কখনো কিছু বলোনি, তোমার সেই নতুন-বোঁকে আজ একবার মনে করে দেখো তো মেজকর্ত, দেখো তো তাকে আজ চেনা যায় কি-না । ব্ৰজবাবু মুখ তুলিয়া নির্নিমেষে তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া রহিলেন। নতুন-বোঁ বলিলেন, মার্জনা ভিক্ষে চেয়েছিলাম, কিন্তু স্বীকার করোনি—উপেক্ষা করে বললে, এ নিয়ে তোমার হবে কি ! কখনো তোমার কাছে কিছু চাইনি, চাইতে তোমার কাছে আমার লজ্জা করে, অভিমান হয়। কিন্তু আর যে যাই বলুক মেজকর্তা, অমন কথা, তুমি কখনো আমাকে বোলো না। বলবে না বলে ? ব্ৰজবাবুর বুকের মধ্যে যেন ভূমিকম্প হইয়া গেল। বহু দিন পূবের একটা ঘটনা মনে পড়িল—তখন রেণুর জন্মের পর নতুন-বোঁ পীড়িত। কি-একটা জরুরী কাজে তাহার ঢাকা যাইবার প্রয়োজন, সেদিনও এই নতুন-বোঁ কণ্ঠস্বরে এমনি জাকুলত৷ ঢালিয়াই মিনতি জানাইয়াছিল—ঘুমিয়ে পড়লে আমাকে ফেলে রেখে পালাবে না বলে ? সেদিন বহু ক্ষতি স্বীকার করিয়াই তাহাকে ঢাকা যাওয়া বন্ধ করিতে হইয়াছিল। সেদিনও স্ত্রৈণ বলিয়া তাহাকে গঞ্জন দিতে লোকে ক্রটি করে নাই। কিন্তু আজ ? ' চাকরটা বুঝিল না কিছুই, কিন্তু ব্যাপার দেখিয়া, হঠাৎ কেমন ভয় পাইয়া বলিয়া ফেলিল, মা, তোমার নীচের ভাড়াটে একজন আফিং খেয়ে মর মর হয়েচে তাই এসেছি ডাকতে । r নতুন-বোঁ সভয়ে প্রশ্ন করিল, কে আফিং খেল রে ? জীবনবাবুর স্ত্রী। জীবনবাবু কোথায় ? চাকরটা বলিল, তার সাত-আটদিন খোজ নেই। শুনেচি অফিসের চাকরি গেছে বলে পালিয়েছে। কিন্তু তোর বাবু করছেন কি ? হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে ? চাকরট বলিল, কিছুই হয়নি মা, পুলিশের ভয়ে বাবু দোকানে চলে গেছেন। তোমার বাড়ি, তোমার ভাড়াটে, তুমিই তার উপায় করে মা, বেটা হয়তো আর বঁচিবে না । রাখাল উঠিয়া দাড়াইল, বলিল, দরকার হতে পারে মা, আমি কি আপনার সঙ্গে যেতে পারি ? নতুন-মা বলিলেন, কেন পারবে না বাবা, এসো। যাবার পূবে এবার তিনি হাত দিয়া স্বামীর পা দুটি স্পর্শ করিয়া মাথায় ঠেকাইলেন। - সকলে বাহির হইলে রাখাল ঘরে তালা দিয়া নতুন-মার অনুসরণ করিল। ఇురి

  • * *३-?