পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কেন পারবো না-তিনি তো বুড়োমানুষ। কিন্তু আমার তো জিনিস কিছু নেই— তবু চলো না দেখি গে। - আসুন । তাহাদের যাইবার সময় সবিতা বলিলেন, না বলে না খেয়ে নীচে থেকেই যেন চলে যেও না রাজু— + রাখাল ফিরিয়া দাড়াইল, কহিল, আজ বড় অ-বেলায় খাওয়া হয়েছে নতুন-ম, ক্ষিদের লেশ নেই। আজ আমাকে ক্ষমা করতে হবে। এই বলিয়া সে সারদার পিছনে নামিয়া গেল। সবিতা আর তাহাকে অনুরোধ করিলেন না। রাখাল চলিয়া গেলে, সারদা নিজের ঘরের দুই-একটা বাকী কাজ সারিয়া লইয়া পুনরায় উপরে যাইবার উপক্রম করিতেছে, সবিতা আসিয়া প্রবেশ করিলেন। তাহার বিছানায় বসিয়া পড়িয়া কহিলেন, একটা পান দাও তো মা, খাই । এ ভাগ্য কখনো সারদার হয় নাই, সে বৰ্ত্তিয়া গেল। তাড়াতাড়ি হাতটা ধুইয়া ফেলিয়া পান সাজিতে বসিতেছে, তিনি বলিলেন, রাজু না খেয়ে রাগ করে চলে গেল ? এত কাজের মধ্যেও ব্যাপারটা ভিতরে ভিতরে তাহাকে বিধিতেছিল, ঝাড়িয়া ফেলিতে পারেন নাই । সারদা মুখ তুলিয়া কহিল, না মা, রাগ করে তো নয়। রাগ করে বই কি ! ও সকাল থেকেই একটু রেগে ছিল, তাতে আবার টাকা দিতে পারিনি—তুমি বুঝি দশ টাকা তাকে দিলে ? না মা, আমার কাছে নিলেন না, মিঠুর দিদিমার কাছ থেকে একশ টাকা এনেদিলুম। এমনি ? শুধু হাতে সে দিল যে বড়ো ? সারদা বলিল, না, এমনি তো নয়। উনি হাতের সোনার ঘড়িটা আমাকে খুলে দিয়ে বললেন, এর দাম তিনশ টাকা, তিনি যা দেন নিয়ে এসো। ওঁর চা-বাগানের কিছু কাগজ আছে তাই বিক্রী করে এই মাসেই শোধ দেবেন বললেন। সবিতা জিজ্ঞাসা করিলেন, হঠাৎ টাকার দরকার ওর হোলো কিসে ? সারদা কহিল, কে-একটি মেয়ে পীড়িত, তারই চিকিৎসার জন্যে । মেয়েটি কে যে তার জন্যে রাতারাতি ওকে ঘড়ি বন্ধক দিতে হয় ? সে তো জানিনে মা ! কিন্তু, বোধ হয় খুব শক্ত অস্থখই হয়েচে । টাকার অভাবে পাছে মারা যায়, এই তার ভয় । মেয়েটির বাপ নাকি ছেলেবেলায় ওঁকে মানুষ করেছিলেন । সবিতা আশ্চর্ঘ্য হইয়া বলিলেন, ছেলেবেলায় ওকে মানুষ করেছিল বললে ? এ șş