পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় মূনাফার রোমাঞ্চকর অঙ্কট আর বলা হইল না—বাধ পড়িল । সবিতা জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি যে আবার ফিরে এলে—বাড়ি গেলে না ? কোন প্রসঙ্গে কি কথা ! প্রশ্নটা তাহার আনন্দবৰ্দ্ধন করিল না এবং বুঝিলেন যে, তাহার ‘মন্ত লোকের বিবরণে সবিতা বিন্দুমাত্র মনঃসংযোগ করে নাই। একটু খতমত খাইয়া কহিলেন, বাড়ি ? না:–আজ আর যাবো না। 3. কেন ? না:–আজ আর— সবিতা একমুহূৰ্ত্ত র্তাহার প্রতি চাহিয়া কহিলেন, মদের গন্ধ বেরুচ্চে—তুমি মদ খেয়েচো ? মদ? আমি ? ( ইসারায় ) মাত্র একটি ফোটা-বুঝলে না— কোথায় খেলে, এই বাড়িতে ? শোন কথা ! বাড়িতে নয় তো কি শুড়ির দোকানে দাড়িয়ে খেয়ে এলুম ? মদ আনতে কে বললে ? কে বললে ! এমন কথা কখনও শুনিনি। বাড়িতে দু-দশজন ভদ্রলোককে আহবান করলে ও একটু না আনিয়ে রাখলে কি হয় ? তাই— সকলেই খেলে ? খেলে না ? ভালো জিনিস অফার করলে কোন শালা না থায় শুনি ? অবাক করলে যে তুমি ? বিমলবাবু খেলেন ? রমণীবাবু এবার একটু ইতস্তত: করিলেন, বলিলেন, না, আজ ও একটু চাল দেখিয়ে গেল। নইলে ওর কীৰ্ত্তি-কাহিনী জানতে বাকী নেই আমার । জানি সব ! সবিতা একটু মৌন থাকিয়া বলিলেন, জানবে বই কি। আচ্ছা যাও এখন। রাত হয়েছে, ও-ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে গে। বলার ধরণটা শুধু কৰ্কশ নয়, রূঢ়। সারদার কানেও অপমানকর ঠেকিল। আজ সন্ধ্যার পর হইতেই সবিতার নীরস কণ্ঠস্বরের প্রচ্ছন্ন রুক্ষত রমণীবাবুকে বিধিতেছিল, এই কথায় সহসা অগ্নিকাণ্ডের ন্যায় জলিয়া উঠিলেন—আজ তোমার হয়েচে কি বলে ত ? মেজাজ দেখি যে ভারি গরম। এতটা ভাল নয় নতুন-বোঁ । সারদার ভয় হইল, এইবার বুঝি একটা বিত্ৰ কলহ বাধিবে, কিন্তু সবিতা নীরবে চোখ বুজিয়া তেমনই রছিলেন, একটা কথারও জবাব দিলেন না। রমণীবাবু কহিতে লাগিলেন, ওই যে বলেচি, সবাই জানে তুমি স্ত্রী নয়—তাতেই ዓ»