পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ করেছিলুম বই কি। কোনরকম আপত্তি করোনি তো মা ? না মা, কোন আপত্তি করিনি। সবিতা বলিলেন, আমি এখন তবে যাই, তুমি ঘরের কাজকৰ্ম্ম সারে, সে এলেই • যেন জানতে পারি সারদা। এই বলিয়া তিনি চলিয়া গেলেন। ঘরের কাজ সারদার সামান্তই, তাড়াতাড়ি সারিয়া ফেলিয়া সে প্রস্তুত হইয়া রহিল—রাখাল নিতে আসিলে যেন বিলম্ব না হয়। তোরঙ্গ খুলিয়া যে দুই-একথানি ভালো কাপড় ছিল তাহাও বাধিয়া রাখিল—সঙ্গে লইতে হইবে । অবিনাশবাবুর স্ত্রীর সঙ্গে তাহার বেশি ভাব, তাহাকে গিয়া জানাইয়া রাখিল ঘরের চাবিটা সে রাখিয়া যাইবে, যেন সন্ধ্যায় প্রদীপ দেওয়া হয়। দূর সম্পর্কের এক বোনের বড় অস্থখ, তাহাকে শুশ্ৰুষা করিতে হইবে। বেলা দশটা বাজে, সবিতা আসিয়া ঘরে ঢুকিলেন–রাজু আসেনি সারদা ? न! भीं । তুমি হয়ত যেতে পারবে না এমন সন্দেহ তার তো হয়নি ? হওয়া তো উচিত নয় মা। আমি একটুও অনিচ্ছে দেখাইনি, তখনি রাজি হয়েছিলুম। তবে আসচে না কেন! সকালেই তো আসার কথা। একটু চিন্তা করিয়া কহিলেন, দারওয়ানকে পাঠিয়ে দিই আর একবার দেখে আমুক সে বাসায় ফিরেচে কি না। বলিয়া চলিয়া গেলেন । কাল হইতে সারদা নিরস্তর চিন্তা করিয়াছে কে এই পীড়িত মেয়েটি। তাহার কৌতুহলের সীমা নাই, তবুও এই নিবৃতিশয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত উচ্চত্রান্তচিত্ত রমণীকে প্রশ্ন করিয়া সে নিঃসংশয় হইতে পারে নাই। কাল রাখালকে জিজ্ঞাসা করিলেই উত্তর মিলিত, কিন্তু তখন এ প্রয়োজন তাহার ছিল না, মনেও পড়ে নাই । এমনি করিয়া সকাল গেল, দুপুর গেল, বিকাল পার হইয়া রাত্রি ফিরিয়া আসিল, কিন্তু রাখালের দেখা নাই। আরও পরে সে যে আসিতে পারে এ আশাও যখন গেল তখন সবিত আসিয়া সারদার বিছানায় শুইয়া পড়িলেন, একটা কথাও বলিলেন না। কেবল চোখ দিয়া অবিরল জল পড়িতে লাগিল। সারদা মুছাইয়া দিতে গেলে তিনি হাতটা তাহার সরাইয়া দিলেন। ঝি আসিয়া খবর দিল বিমলবাবু আসিয়াছেন দেখা করিতে। সবিত কহিলেন, তাকে বলে গে বাৰু বাড়ি নেই। ঝি কহিল, তিনি নিজেই জানেন । বললেন, আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেচেন, বাবুর সঙ্গে নয়। ግፀ