পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় নিমেষে ছড়াইয়া পড়িল। ছেট হইয়া সেইদিকে চাহিয়া ব্ৰজবাৰু হঠাৎ চঞ্চল হইয়া উঠিলন, কিন্তু তৎক্ষণাৎ আত্মসংবরণ করিয়া বলিলেন, তোমার মেয়ের জন্তেই ভাবনা নতুন-বোঁ । আচ্ছা দেখি যদি— বক্তব্য শেষ করিতে সবিতা দিলেন না, মুখ তুলিয়া চাছিলেন। চোখ জলে ভাসিতেছে, কহিলেন, না মেজকর্ত, মেয়ের জন্ত আর জামি ভাবিনে । তাকে দেখবার লোক আছে, কিন্তু তুমি ? এই তার মাথায় দিয়ে একদিন আমাকে এ-সংসারে তুমি এনেছিলে— লহুল বাধা পড়িল, র্তাহার কথাও সম্পূর্ণ হইতে পাইল না, বাহিরে ডাক পড়িল, রাখালবাবু ? রাখাল উপর হইতে সাড়া দিল, জাম্বন ডাক্তারবাৰু। লবিতা দাড়াইয়া উঠিয়া ঘরের দ্বার খুলিয়া একদিকে সরিয়া দাড়াইলেন। ব্ৰজবাৰু বাছিয় হইয়া গেলেন। سb ঠাকুর-ঘরের ভিতর ব্ৰজবাবু এবং বাহিরে মুক্ত দ্বারের অনতিদূরে বসিয়া সবিতা অপলক-চক্ষে চাহিয়া স্বামীর কাজগুলি নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। একদিন এই ঠাকুরের সকল দায়িত্ব ছিল তাহার নিজের, তিনি না করিলে স্বামীর পছন্দ হইত না। তখন সময়াভাবে অন্তাষ্ঠ বহু সাংসারিক কর্তব্য র্তাহাকে উপেক্ষা করিতে হইত। তাই পিসশাশুড়ী নানা ছলে র্তাহার ক্রটি ধরিয়া নিজের গোপন বিদ্বেষের উপশম খুজিতেন, আশ্রিত ননদের বাকা কথায় মনের ক্ষোত মিটাইত, বলিত, তাহারা কি বামুনের ঘরের মেয়ে নয় ? দেব-দেবতার কাজ-কৰ্ম্ম কি জানে না ? পূজা-অৰ্চনা, ঠাকুর-দেবতা কি নতুন-বোঁয়ের বাপের-বাড়ির একচেটে যে সে-ই শুধু শিখে এসেছে ? এ-সকল কথার জবাব সবিতা কোনদিন দিতেন না। কখনো বাধ্য হইয়া এ-ঘরের কাজ যদি অপরকে করিতে দিতে হইত, সারাদিন তাহার মন কেমন করিতে থাকিত, চুপি চুপি আসিয়া ঠাকুরের কাছে ক্ষমা চাহিয়া বলিতেন, গোবিন্দ, জযয় হচ্চে বাবা জানি, কিন্তু উপায় যে নেই! সেদিন নিরবচ্ছিন্ন শুচিত ও নিচ্ছিত্র অনুষ্ঠানে কি তীক্ষ দৃষ্টিই না তাহার ছিল। আর আজ ? সেই গোপাল-মূৰ্ত্তি তেমনি প্রশাস্ত-খে আজও চাহিয়া আছেন, অভিমানের কোন চিহ্ন ও-ছুটি চোখে নাই । կ, Չ