পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বেণী আরও একটু অগ্রসর হইয়া একবার এদিক-ওদিক নিরীক্ষণ করিয়া লইয়া চৌকাঠের উপর উবু হইয়া বসিল। তার গর কণ্ঠস্বর অত্যন্ত মৃদু করিয়া বলিল, রমা, বঁাশ মুইয়ে ফেলতে চাও ত, এই বেলা, পেকে গেলে আর হবে না তা নিশ্চয় বলে দিচ্চি। বিষয়-সম্পত্তি কি করে রক্ষে করতে হয়, এখনও সে শেখেনি— এর মধ্যে যদি না শক্রকে নির্মুল করতে পারা যায় ত ভবিষ্যতে আর যাবে না, এই কথাটা আমাদের দিবারাত্রি মনে রাখতে হবে যে, এ তারিণী ঘোষালের ছেলে—আর কেউ নয়। সে আমি বুঝি বডদ। তুই না বুঝি কি দিদি ! ভগবান তোকে ছেলে গড়তে গড়তে মেয়ে গড়েছিলেন বৈ ত নয়। বুদ্ধিতে একটা পাকা জমিদারও তোর কাছে হটে যায়, এ কথা আমরা সবাই বলাবলি করি । আচ্ছা, কাল একবার আসব। অ{জ বেলা হ’ল যাই, বলিয়া বেশী উঠিয়া পড়িল। রমা এই প্রশংসায় অত্যন্ত প্রীত হইয়া উঠিয়৷ দাড়াইয়া বিনয়-সহকারে কি একটু প্রতিবাদ করিতে গিয়াই তাহার বুকের ভিতর ছাৎ করিয়া উঠিল। প্রাঙ্গণের একপ্রান্ত হইতে অপরিচিত গম্ভীর কণ্ঠের আহবান আপিল —রাণী কই রে ? রমেশের মা এই নামে ছেলেবেলায় তাহাকে ডাকিতেন। সে নিজেই এতদিন তাহা ভুলিয়। গিয়াছিল। বেণীর প্রতি চাহিয়া দেখিল তাহার সমস্ত মুখ নীলবর্ণ হইয়া গিয়াছে। পরক্ষণেই রুক্ষ-মাথা, খালি-পা, উত্তরীয়টা মাথায় জড়ানো রমেশ আসিয়া দাড়াইল । বেণীর প্রতি চোখ পড়িবামাত্র বলিয়া উঠিল, এই যে বড়দা এখানে ? বেশ চলুন, আপনি না হ’লে করবে কে ? আমি সারা গ৷ আপনাকে খুজে বেড়াচ্চি। কৈ রাণী কোথায় ? বলিয়াই কপাটের স্বমুখ আসিয়া দাড়াইল । পালাইবার উপায় নাই, রমা ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল। রমেশ মুহূর্তমাত্র তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মহাবিস্ময় প্রকাশ করিয়া বলিয়৷ উঠিল, এই যে ! আরে ইস, কত বড় হয়েছিস্ রে ? ভাল আছিস্ ? রম তেমনি অধোমুখে দাড়াইয়া রহিল। হঠাৎ কথা কহিতেই পারিল না, কিন্তু রমেশ একটুখানি হাসিয়া তৎক্ষণাৎ কহিল, চিনতে পাচ্ছিল রে ? আমি তোদের রমেশদা । এখনও রমা মুখ তুলিয়। চাহিতে পারিল না ! কিন্তু মৃদুকণ্ঠে প্রশ্ন করিল, আপনি ७ॉल अां८छ्न ? ই ভাই, ভাল আছি। কিন্তু আমাকে আপনি কেন রমা ? বেণীর দিকে চাহিয়া একটুখানি মলিন হাসি হাসিয়া বলিল, রমার সেই কথাটা আমি কোন দিন ১৩৪