পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ গাজুলী বলিতে লাগিল, তুমি ত আমার পর নও বাবা-নিতান্ত আপনার । তোমার মা যে আমার একেবারে সাক্ষাৎ পিসতুতো বোনের খুড়তুতো ভগিনী। রাধানগরের বাড়ুয্যে-বাড়ি—সে সব তারিণীদা জানতেন। তাই যে কোন কাজকৰ্ম্মে—মামলা-মোকদমা করতে, সাক্ষী দিতে—ডাক গোবিন্দকে ! ধৰ্ম্মদাস প্রাণপণ-বলে—কাসি থামাইয়া খিচাইয়া উঠিল, কেন বাজে বকিস্ গোবিন্দ ? খক্‌—খক্-থকৃ—আমি আজকের নয়, না জানি কি ? সে বছর সাক্ষী দেবার কথায় বললি, আমার জুতো নেই, খালি-পায়ে যাই কি করে ? থকৃ—খক্‌ —তারিণী অমনি আড়াই টাকা দিয়ে একজোড়া জুতো কিনে দিলে। তুই সেই পায়ে দিয়ে বেণীর হয়ে সাক্ষী দিয়ে এলি ! থকৃ—থকৃ—খক্‌ ৷ গোবিন্দ চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া কহিলেন, এলুম ? এলিনে ? দূর মিথ্যাবাদী। মিথ্যাবাদী তোর বাবা । গোবিন্দ তাহার ভাঙ্গা ছাতি হাতে করিয়া লাফাইয়া উঠিলেন, তবে রে শালা ! ধৰ্ম্মদাস তাহার বঁাশের লাঠি উচাইয়া ধরিয়া হুঙ্কার দিয়াই প্রচণ্ডভাবে কাসিয়া ফেলিল। রমেশ শশব্যস্তে উভয়ের মাঝখানে আসিয়া পড়িয়া স্তম্ভিত হইয়া গেল । ধৰ্ম্মদাস লাঠি নামাইয়া কাসিতে কাসিতে বসিয়া পড়িয়া বলিল, ও শালার সম্পর্কে আমি বড় ভাই হই কি না, তাই শালার আঙ্কেল দেখ— ও, শাল আমার বড় ভাই ! বলিয়া গোবিন্দ গাঙ্গুলীও ছাতি গুটাইয়া বসিয়া পড়িল । শহরের ময়রারা ভিয়ান ছাডিয়া চাহিয়া রহিল। চতুর্দিকে যাহার কাজ-কৰ্ম্মে নিযুক্ত ছিল, চেঁচামেচি শুনিয়া তাহারা তামাশা দেখিবার জন্য স্বমুখে ছুটিয়া আসিল । ছেলেমেয়েরা খেলা ফেলিয়৷ ই করিয়া মজা দেখিতে লাগিল এবং এই সমস্ত লোকের দৃষ্টির স্বমুখে রমেশ লজ্জায় বিস্ময়ে হতবুদ্ধির মত স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া রহিল। তাহার মুখ দিয়া একটা কথাও বাহির হইল না। কি এ ? উভয়েই প্রাচীন, ভদ্রলোক— ব্রাহ্মণ-সপ্তান ! এত সামান্ত কারণে এমন ইতরের মত গালিগালাজ করিতে পারে । বারান্দায় বসিয়া ভৈরব কাপড়ের থাক দিতে দিতে সমস্তই দেখিতেছিল, শুনিতেছিল। এখন উঠিয়া আসিয়া রমেশকে উদ্দেশ করিয়া কহিল, প্রায় শ’চারেক কাপড ত হ’ল, আরও চাই কি ? রমেশের মুখ দিয়া হঠাৎ কথাই বাহির হইল না। ভৈরব রমেশের অভিভূত ভাৰ লক্ষ্য করিয়া হাসিল। মৃদু অম্বুযোগের স্বরে কহিল, ছিঃ গাজুলীমশাই! বাৰু একেবারে অবাক হয়ে গেছেন। আপনি কিছু মনে করবেন না বাৰু, এমন চের } %e