পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কেউ আমার সঙ্গে আসেনি। রমেশ আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, সে কি কথা! এখানে একা এলে কোন সাহসে ? একজন দাসী পৰ্য্যন্ত সঙ্গে করে আনোনি । রমা তেমনি মৃত্নশ্বরে কহিল, তাতেই বা কি হ’তো ? সেও ত আমাকে তোমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারত না ! তা না পারুক, লোকের মিথ্যা দুর্নাম থেকে ত বাচাতে পারত। রাত্রি কম হয়নি রাণী ! সেই বহুদিনের বিষ্কৃত নাম ! রম সহসা বলিতে গেল, দুর্নামের বাকী নেই রমেশদ, কিন্তু আপনাকে সংবরণ করিয়া শুধু কহিল, তাতেও ফল হ’ত না রমেশদা। অন্ধকার রাত্রি নয়—আমি বেশ যেতে পারব, বলিয়া আর কোন কথার জন্য অপেক্ষ না করিয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল । >W9 প্রতি বৎসর রমা ঘটা করিয়া দুর্গোৎসব করিত। এবং প্রথম পূজার দিনেই গ্রামের সমস্ত চাষাভূষা প্রভৃতিকে পরিতোষপূর্বক ভোজন করাইত। ব্রাহ্মণ-বাটতে মায়ের প্রসাদ পাইবার জন্ত এমন হুড়াছড়ি পড়িয়া যাইত যে, রাত্রি এক-প্রহর পর্য্যন্ত উড়ে-পাতায় এটােতে কাটাতে বাড়িতে পা ফেলিবার জায়গা থাকিত না। শুধু হিন্দু নয়, পিয়পুরের প্রজারাও ভিড করিতে ছাড়িত না। এবারও দে নিজে অনুস্থ থাকা সত্বেও আয়োজনের ক্রটি করে নাই। চণ্ডীমণ্ডপে প্রতিমা ও পূজার সাজসরঞ্জাম। নীচে উংসবের প্রশস্ত গ্রাঙ্গণ ৷ সপ্তমীপূজা যথাসময়ে সমাধা হইয়া গিয়াছে। ক্রমে মধ্যাহ্ন অপরাহ্নে গড়াইয়া তাহাও শেষ হইতে বসিয়াছে । আকাশে সপ্তমীর খণ্ডচত্র পরিস্ফুট হইয়া উঠিতে লাগিল, কিন্তু মুখুয্যেবাড়ির মস্ত উঠান জন-কয়েক ভদ্রলোক ব্যতীত একেবারে শূন্ত খা-খা করিতেছে। বাড়ির ভিতরে অন্ধের ভূপ ক্রমে জমাট বাধিয়া কঠিন হইতে লাগিল, ব্যঞ্জনের রাশি শুকাইয়া বিবর্ণ হইয়া উঠিতে লাগিল, কিন্তু এখন পৰ্য্যন্ত একজন চাষাও মায়ের প্রসাদ পাইতে বাড়িতে পা দিল না । ইস্! এত আহার্ধ্য-পেয় নষ্ট করে দিচ্চে দেশের ছোটলোকদের দল ? এত বড় ম্পৰ্ব৷ বেণী হক হাতে একবার ভিতরে, একবার বাহিরে কাছাকি দাপাদাপি করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন—বেটাদের শেখাবে-চাল কেটে তুলে দেবে-এমন করবো, তেমন করবে, ইত্যাদি। গোবিন্দ, ধর্শ্বাস, হালদার প্রভূত এর ক্রষ্টমুখে অবিশ্রাত্ত