পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বিতীয় সম্ভার).djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐীকান্ত দেখিলাম, তাহাতে জিজ্ঞাসা করিবার, প্রশ্ন করিবার আর কিছুই রছিল না। অভিভূতের স্থায় কিছুক্ষণ দাড়াইয়া থাকিয় নীরবে ফিরিয়া যাইতেছিলাম—অকস্মাৎ আমার দুই কানের মধ্যে যেন দুরকম কান্নার স্বর একই সঙ্গে বাজিয়া উঠিল। একটা সেই পাপিষ্ঠের, অপরটা সেই বৰ্ম্ম মেয়েটির । চলিয়া যাইতেছিলাম, কিন্তু ফিরিয়া আসিয়া তাহীদের প্রাঙ্গণের মাঝখানে দাড়াইলাম। মনে মনে বলিলাম, না, এমন করিয়া অপমান করিয়া আর আমার যাওয়া হইবে না। নাই, নাই— এমন বলিতে নাই, এমন করিতে নাই—এ উচিত নয়, এ ভাল নয়—এসব অভ্যাস মত অনেক শুনিয়াছি, অনেক শুনাইয়াছি, কিন্তু আর না। কি ভাল, কি মন্দ, কেন ভাল, কোথায় কাহার কিসে মন্দ—এ সকল প্রশ্ন পারি যদি তাহার নিজের মুখে শুনিয়া তাহারই মুখের পানে চাহিয়া বিচার বরিব ; না পারি ত শুধু পুথির লেখা অক্ষরের প্রতি চোখ পাতিয়া মীমাংসা করিবার অধিকার আমার নাই, তোমার নাই, বোধ করি বা বিধাতারও নাই ! 'a হঠাৎ অভয়া দ্বার খুলিয়া স্বমুখে আসিয়া দাড়াইল, কহিল, জন্ম-জন্মাস্তরের অন্ধসংস্কারের ধাক্কাটা প্রথমে সামলাতে পারিনি বলেই পালিয়েছিলুম শ্ৰীকান্তবাবু, নইলে ওটা আমার সত্যিকারের লজ্জা বলে ভাববেন না যেন । তাহার সাহস দেখিয়া অবাক হইয়া গেলাম। অভয়া কহিল, আপনার বাসায় ফিরে যেতে আজ একটু দেরি হবে। রোহিণীবাবু এলেন ব'লে। আজ দুজনেই আমরা আপনার আসামী । বিচারে অপরাধ সাব্যস্ত হয়, আমরা তার দণ্ড নেব । রোহিণীকে ‘বাবু বলিতে এই প্রথম শুনিলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি ফিরে এলেন কবে ? تي অভয়া কহিল, পরশু। কি হয়েছিল, জানতে নিশ্চয় আপনার কৌতুহল হচ্ছে। বলিয়া সে নিজের দক্ষিণ বাহু অনাবৃত করিয়া দেখাইল, বেতের দাগ চামড়ার উপর কাটিয়া কাটিয়া বসিয়াছে। বলিল, এমন আরও অনেক আছে, যা আপনাকে দেখাতে পারলুম না । যে-সকল দৃষ্ঠে মাহধের পৌরুষ হিতাহিত জ্ঞান হারাইয়া ফেলে ইহা তাহারই একট। অভয়া আমার স্তব্ধকঠিন মুখের প্রতি চাহিয়া চক্ষের নিমেষে সমস্ত বুঝিয়া ফেলিল, এবং এইবার একটুখানি হাসিয়া কহিল, কিন্তু ফিরে আসার এই আমার একমাত্র কারণ নয় ঐকাস্তবাবু, আমার সতীধর্মের এ সামান্ত একটু পুরস্কার । তিনি যে স্বামী আর আমি যে তার বিবাহিত স্ত্রী, এ তারই একটু চিহ্ন। סיף २$--- Xe