পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন এ-বাড়ির সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব হয়ে আজ থেকে তুই সার্থক হ—এই আমার আশীৰ্ব্বাদ । হরিশবাবু ভাল লোক, বাগানময় তার ধন্ত ধষ্ঠ পড়ে গেল—সবাই বললে, লক্ষ্মীর কপাল ভাল। ভাল ত বটেই। শুধু মেয়েমান্বযেই জানে এতবড় দুর্তোগ, এত বড় ফাকি আর নেই, কিন্তু একদিন এ বিড়ম্বন যখন ধরা পড়ে, তখন প্রতিকারের সময় বয়ে যায়। হরেন্দ্র কহিল, তার পরে ? কমল বলিল, পরের খবর জানিনে হরেনবাবু, লক্ষ্মীর সার্থকতার শেষ দেখে আসতে পারিনি—আগেই চলে আসতে হয়েছিল। কিন্তু ঐ যে আমার গাড়ী এসে দাঁড়াল। চলুন, পথে যেতে যেতে বলব। নমস্কার । বলিয়া সে একমুহূর্তে উঠিয়া দাড়াইল । নীলিমা নিঃশবো নমস্কার করিয়া দাড়াইয়া রহিল, তাহার দুই চক্ষের তারকা যেন অঙ্গারের মত জলিতে লাগিল ।

  • ES

“আশ্রম’ শব্দটা কমলের সম্মুখে হরেন্দ্রর মুখ দিয়া হঠাৎ বাহির হইয়া গিয়াছিল। শুনিয়া অবিনাশ যে ঠাট্টা করিয়াছিলেন সে অন্যায় হয় নাই। জনকয়েক দরিদ্র ছাত্র ওখানে থাকিয়া বিনা-খরচায় স্কুলে পড়া-শুনা করিতে পায়—ইহাই লোকে জানে। বস্তুতঃ নিজের এই বাসস্থানটাকে বাহিরের লোকের কাছে অতবড় একটা গৌরবের পদবীতে তুলিয়া ধরার সঙ্কল্প হরেন্দ্রর ছিল না। ও নিতান্তই একটা সাধারণ ব্যাপার এবং প্রথমে আরম্ভও হইয়াছিল সামান্তভাবে। কিন্তু এ-সকল জিনিসের স্বভাবই এই যে, দাতার দুর্বলতায় একবার জন্মগ্রহণ করিলে আর ইহাদের গতির বিরাম থাকে না। কঠিন আগাছার ন্যায় মৃত্তিকার সমস্ত রস নিঃশেষে আকর্ষণ করিয়া ডালে-মূলে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িতে ইহাদের বিলম্ব হয় না। হইলও তাই। এ বিবরণটাই প্রকাশ করিয়া বলি । হরেক্সর ভাই-বোন ছিল না । পিতা ওকালতি করিয়া অর্থ সঞ্চর করিয়া গিয়াছিলেন। তাহার মৃত্যুর পরে সংসারে অবশিষ্ট ছিলেন শুধু হরেন্দ্রর বিধবা মা। } e \