পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন হরেন্দ্র কহিল, চাকরি ত গাছের ফল নয় সতীশ, যে, ইচ্ছে করলেই পেড়ে হাতে দেব । তার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করতে হয়। সতীশ বলিল, তা হলে তাই করুন। আপনি যখন আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রেসিডেন্ট ও আমি এর সেক্রেটারি, তখন সকল বিষয় আপনার গোচর করাই আমার কর্তব্য । আপনি ওকে অত্যন্ত স্নেহ করেন এবং আমারও সে বন্ধু । তাই তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে এতদিন আমার প্রবৃত্তি যায়নি, কিন্তু এখন আপনাকে সতর্ক করে দেওয়া আমি কৰ্ত্তব্য মনে করি । হরেন্দ্র মনে মনে ভীত হইয়া কহিল, কিন্তু আমি জানি তার নিৰ্ম্মল চরিত্র— সতীশ ঘাড় নাড়িয়া বলিল, হ্যা । এদিক দিয়ে অতি বড় শত্রুও তার দোষ দিতে পারে না। রাজেন আজীবন কুমার, কিন্তু সে ব্রহ্মচারীও নয়। আসল কারণ, স্ত্রীলোক বলে সংসারে যে কিছু আছে এ-কথা ভাববারও তার সময় নেই । এই বলিয়া সে ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া কহিল, তার চরিত্রের অভিযোগ আমি করিনি, সে অস্বাভাবিক রকমের নিৰ্ম্মল, কিন্তু— হরেন্দ্র প্রশ্ন করিল, তবুও তোমার কিন্তুটা কি ? সতীশ বলিল, কলকাতার বাসায় আমরা দুজনে এক ঘরে থাকতাম। ও তখন ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুলের ছাত্র এবং বাসায় বি-এল-সি পড়ত। সবাই জানত ও-ই ফাষ্ট হবে, কিন্তু একজামিনের আগে হঠাৎ কোথায় চলে গেল— হরেন্দ্র বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, ও-কি ডাক্তারি পড়ত না-কি ? কিন্তু আমাকে যে বলেছিল ও শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভৰ্ত্তি হয়েছিল, কিন্তু পড়াগুনে ভয়ানক শক্ত বলে ওকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল— _ সতীশ কহিল, কিন্তু খোজ নিলে দেখতে পাবেন কলেজে থার্ড ইয়ারে সে-ই হয়েছিল প্রথম। অথচ বিনা কারণে চলে আসায় কলেজের সমস্ত মাষ্টারই অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিল । ওর পিসিমা বড়লোক, তিনিই পড়ার খরচ দিচ্ছিলেন। এই ব্যাপারে বিরক্ত হয়ে টাকা বন্ধ করলেন, তার পরেই বোধ হয় আপনার সঙ্গে ওর পরিচয়। বছর-দুই ঘুরে ঘুরে যখন ফিরে এলো তখন পিসি তারই মত নিয়ে তাকে ডাক্তারি স্কুলে ভৰ্ত্তি করে দিলেন। ক্লাশে প্রত্যেক বিষয়েই ফাষ্ট হচ্ছিল, অথচ বছর তিনেক পড়ে হঠাৎ একদিন ছেড়ে দিলে। ওই এক ছুতো—ভারি শক্ত, ও আমি পেরে উঠবে না । ছেড়ে দিয়ে আমার বাসায় আমার ঘরে এসে আডড নিলে । বললে, ছেলে পড়িয়ে বি-এল-সি পাশ করে কোথাও কোন গ্রামে গিয়ে মাষ্টারী করে কাটাব । আমি বললাম, বেশ তাই কর। তার পরে দিন-পোনর মাওয়া-খাওয়ার S०१ 8 الاص-2ج