পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(અર્થ હસદ્ધ মাত্রই সত্য নয় কমল। তোমাকে অনেক কথাই শিবনাথ শিখিয়েচে, কেবল এইটি দেখচি সে শেখাতে বাকি রেখেচে । কমলের মুখ রাঙা হইয়া উঠিল। কিন্তু ইহার জবাব দিল নীলিমা । কহিল, শিবনার্থের ক্রটি হয়েচে মুখুয্যেমশাই, তাকে জরিমানা করে আমরা তার শোধ দেব। কিন্তু গুরুগিরিতে কোন পুরুষই ত কম নয়। তাই প্রার্থনা করি তোমার বয়সের পুজি থেকে আরও দু-একটা প্রিয় বাক্য বার কর—আমরা সবাই শুনে ধন্য হই। অবিনাশ অন্তরে জলিয়া গেলেন। এত লোকের মাঝখানে শুধু কেবল উপহাসের জন্যই নয়, এই বক্রোক্তির অভ্যন্তরে যে তীক্ষ ফলাটুকু লুকানো ছিল, তাহা বিদ্ধ করিয়াই নিরস্ত হইল না, অপমান করিল। কিছুকাল হইতে কি একপ্রকার অসন্তোষের তপ্ত বাতাস কোথা হইতে বহিয়া আসিয়া উভয়ের মাঝখানে পড়িতেছিল। ঝড়ের মত ভীষণ কিছুই নয, কিন্তু খড়-কুট ধূলা-বালি উড়াইয়া মাঝে মাঝে চোখে মুখে আনিয়া ফেলিতেছিল। অল্প একটুখানি নড়া দাতের মত, চিবানোর কাজটা চলিতেছিল, কিন্তু চিবানোর আনন্দে বাজিতেছিল। হরেন্দ্রকে উদ্দেশ করিয়া কহিলেন, রাগ করতে পারিনে হরেন, তোমার বৌদি নিতান্ত মিথ্যে বলেননি— আমাকে চিনতে ত তার বাকি নেই—ঠিকই জানেন আমার পুজি-পাট সেই সেকেলে সোজা ধরণের, তাতে বস্তু থাকলেও রস-কস নেই। হরেন্দ্র জিজ্ঞাসা করিল, এ-কথার মানে সেজদা ? অবিনাশ বলিলেন, তুমি সন্ন্যাসী মানুষ, মানেটা ঠিক বুঝবে না। কিন্তু ছোটগিল্পী হঠাৎ যে-রকম কমলের ভক্ত হয়ে উঠেচেন, তাতে আশা হয় তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগালে ধন্য হবার পথ ওঁর আপনি পরিষ্কার হবে । এই ইঙ্গিতের কদৰ্য্যত তাহার নিজের কানেও লাগিয়াছিল, কিন্তু দুর্বিনয়ের স্পৰ্দ্ধায় আরও কি একটা বলিতে যাইতেছিলেন, কিন্তু হরেন্দ্র থামাইয়া দিল। ক্ষুণ্ণ-কণ্ঠে কহিল, সেজদা, আপনারা সকলেই আজ অতিথি । কমলকে আমি আশ্রমের পক্ষে সসম্মানে নিমন্ত্রণ করে এনেছিলাম, এ-কথা আপনার ভুলে গেলে আমাদের দুঃখের সীমা থাকবে না । নীলিমা বলিল, তা হলে আমার সম্বন্ধে দয়া করে ওঁকে স্মরণ করিয়ে দাও ঠাকুরপো, যে, কাউকে ছোটগিল্পী বলে ডাকতে থাকলেই সে সত্যিকার গৃহিণী হয়ে ধায় না। তাকে শাসন করার মাত্রা-বোধ থাকা চাই। আমার দিক থেকে মুখুয্যেমশায়ের অভিজ্ঞতার ভাড়ার-ঘরে এইটুকু আজ বরঞ্চ জমা হয়ে থাক্‌-ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে। 瞬 >>N)、