পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ হঁ, গুৰু কেবল এইজন্তই বাইরে থেকে ঘরের পানে তার চোখ ফেরাতে বলেहिरणन-ठांदे । কমল জিজ্ঞাসা করিল, বাইরে যদি আলো জলে, যদি পূৰ্ব্বদিগন্তে স্বর্য্যোদয় হয়, তবুও পিছন ফিরে পশ্চিমের স্বদেশের পানেই চেয়ে থাকতে হবে ? সেই হবে দেশপ্রীতি ? কিন্তু এ প্রশ্ন বোধ করি আপ্তবাবুর কানে গেল না, তিনি নিজের ঝোঁকে বলিতে লাগিলেন, আজ দেশের ধৰ্ম্ম, দেশের পুরাণ ইতিহাস, দেশের আচার-ব্যবহার, রীতি-নীতি যা বিদেশের চাপে লোপ পেতে বসেছিল, তার প্রতি যে বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা ফিরে এসেচে এ ত শুধু তাদেরই ভবিষ্যৎ-দৃষ্টির ফল। জাতি হিসাবে আমরা ধ্বংসের রাস্তায় চলেছিলাম, কমল, এ বঁাচ কি সোজা বাচা ? আবার সমস্ত ফিরিয়ে আনতে না পারলে আমরা যে কোনমতেই রক্ষা পাব না, এ বোধশক্তি আমাদের দিলে কে বল ত ? অজিত উত্তেজনায় অকস্মাৎ দাড়াইয়া কহিল, এ-সব চিন্তাও যে আপনার মনে স্থান পেতে পারে এ কখনো আমি কল্পনাও করিনি। আমার ভারি দুঃখ যে এতকাল আপনাকে চিনতে পারিনি, আপনার পায়ের নীচে বলে উপদেশ গ্রহণ করিনি। সে আরও কত কি বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু বাধা পড়িল । বেহার ঘরে ঢুকিয় জানাইল যে, হরেন্দ্রবাবু প্রভৃতি দেখা করিতে আসিয়াছেন এবং পরক্ষণেই সে সতীশ ও রাজেনকে লইয়া প্রবেশ করিল। কহিল, খবর নিয়ে জানলাম শিবনাথবাবু ঘুমোচ্চেন। আসবার সময় ডাক্তারের বাড়িটা অমনি ঘুরে এলাম ; তার বিশ্বাস অমুখ সিরিয়স নয়, শীঘ্রই সেরে উঠবেন। এই বলিয়া সে কমলকে একটা নমস্কার করিয়া সঙ্গীদের লইয়া আসন গ্রহণ করিল। আশুবাবু ঘাড় নাড়িয়া সায় দিলেন, কিন্তু তাহার দৃষ্টি ছিল অজিতের প্রতি এবং তাহারই উদ্দেশে বলিলেন, আমার সমস্ত যৌবনকালটা যে, বিদেশেই কেটেচে এ তোমরা ভোল কেন ? এমন অনেক বস্তু আছে যা কাছ থেকে দেখা যায় না, যায় শুধু দূরে গিয়ে দাড়ালে। আমি যে স্পষ্ট দেখতে পেয়েচি শিক্ষিত-মনের পরিবর্তন। এই যে হরেন্দ্রর আশ্রম, এই যে নগরে নগরে এর ডাল-পালা ছড়াবার আয়োজন, এ কিশুধু এইজন্যই নয় ? বিশ্বাস না হয় ওঁকেই জিজ্ঞাসা করে দেখ। সেই ব্রহ্মচৰ্য্য, সেই সংযম-সাধন, সেই পুরানো রীতি-নীতির প্রবর্তন—এসবই কি আমাদের সেই অতীত দিনটির পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যম নয় ? তাই যদি ভুলি, তারই প্রতি যদি আস্থা হারাই, আশা করবার আর আমাদের বাকি থাকে কি ? তপোবনের ষে আদর্শ o SSર