পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ নিজের রসিকতার আনন্দোচ্ছসে পুনরায় ঘর ভাঙিবার উপক্রম করিলেন। হাসি থামিলে কহিলেন, কিন্তু কি বলব মশাই, বাতে পক্ষু। নইলে যে পায়ের ধূলোর এত গৌরব বাড়ালেন, আশু গুপ্তর সেই পাসের ধূলো ঝপট দেবার জন্তেই আপনাকে একটা চাকর রাখতে হ’ত অবিনাশবাবু। কিন্তু আজ আর বসবার যে নেই, এখুনি উঠতে হবে । এই অনবসরের হেতুর জন্য সকলেই তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া রছিলেন । আশুবাবু বলিলেন, একটা আবেদন আছে। মঞ্জুরির জন্ত মাকে পর্য্যন্ত টেনে এনেচি। কালও ছুটির দিন, সন্ধ্যার পর বাসায় একটুখানি গান-বাজনার আয়োজন করেচি–সপরিবারে যেতে হবে । তার পর একটু মিষ্টি-মুখ । মেয়েকে কহিলেন, মণি, বাড়ির মধ্যে গিয়ে একবার হুকুমটা নিয়ে এসো মা । দেরি করলে হবে না। আর একটা কথা, মাই ইয়ং ফ্রেণ্ডস, মেয়েদের জন্য না হোক, আমাদের পুরুষদের জন্য দুরকম খাবার ব্যবস্থাই—অর্থাৎ কি না—প্রেজুডিস যদি না থাকে ত—বুঝলেন না ? বুঝিলেন সকলেই এবং একবাক্যে প্রকাশ করিলেন সকলেই যে, তাহাদের প্রেজুডিস নাই। আশুবাবু খুশি হইযা কহিলেন, না থাকারই কথা । মেযেকে বলিলেন, মণি, থাবার সম্বন্ধে মা-লক্ষ্মীদেরও একটা মতামত নেওয়া চাই, সে যেন ভুলো না । প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে তাদের অভিরুচি এবং আদেশ নিয়ে বাসায় ফিরতে আজ বোধ করি আমাদের সন্ধ্যে হৰে যাবে। একটু শীঘ্ৰ করে কাজট। সেরে এস মা । মনোরমা ভিতরে যাইবার জন্ত উঠিতেছিল, অবিনাশ কহিলেন, আমার ত বহুদিন যাবৎ গৃহ শূন্ত । শুালিকা আছেন, কিন্তু বিধবা । গান শোনবার সখ প্রচুর, অতএব যাবেন নিশ্চিত। কিন্তু খাওয়া— আশুবাবু তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলেন, তারও অভাব হবে না অবিনাশবাবু, আমার মণি রয়েচে যে। মাছ-মাংস পিয়াজ-রস্থন ও ত স্পর্শ করে না । অবিনাশ আশ্চৰ্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, উনি মাছ-মাংস খান না ? আশুবাবু বলিলেন, খেতেন সবই, কিন্তু বাধাজির ভারি অনিচ্ছে, সে হ’লে৷ আবার সন্ন্যাসী-গোছের মানুষ- , চক্ষের পলকে মনোরমার সমস্ত মুখ রাঙা হইয়া উঠিল ; পিতার অসমাপ্ত বাক্যের মাঝখানেই বাধা দিয়া কহিল, তুমি কি-সমস্ত বলে যাচ্ছ বাবা । \o