পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন বল ত ? হরেজকে রোজই জিজ্ঞাসা করি, সে রোজই এসে একই উত্তর দেয়, বাসায় তালাবন্ধ, তার সন্ধান পাইনে। নীলিমা সন্দেহ করছিলেন হয়ত বা তুমি দিনকয়েকের তরে কোথাও চলে গেছ । • হরেন্দ্ৰই ইহার জবাব দিল, কহিল, আর কোথাও না—এই আগ্রাতেই মুচীদের পাড়ায় সেবার কাৰ্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। আজ দেখা পেয়ে ধরে এনেচি। আপ্তবাবু ভয়ব্যাকুল-কণ্ঠে কহিলেন, মুচীদের পাড়ায় ? কিন্তু কাগজে লিখচে যে পাড়াটা উজোর হয়ে গেল। এতদিন তাদের মধ্যেই ছিলে ? একা ? ' কমল ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না, একলা নয়, সঙ্গে রাজেন ছিলেন। শুনিয়া হরেন্দ্র তাহার মুখের প্রতি চাহিল, কিছু বলিল না। তার তাৎপৰ্য্য এই যে, তুমি না বলিলেও আমি অনুমান করিয়াছিলাম। যেখায় দৈবের এতবড় নিগ্ৰহ মুরু হইয়াছে সে দুর্ভাগীদের ত্যাগ করিয়া সে যে কোথাও এক পা নড়িবে না এ আমি জানিব না ত জানিবে কে ? 曾 আপ্তবাবু কহিলেন, অদ্ভুত মানুষ এই ছেলেটি। ওকে দু-তিনদিনের বেশি দেখিনি, কিছুই জানিনে, তবু মনে হয় কি যে এক স্বষ্টিছাড়া ধাতুতে ও তৈরী ! তাকে নিয়ে এলে না কেন, ব্যাপারগুলো জিজ্ঞেস করতাম। খবরের কাগজ থেকে ত সব cदांदों शृग्न न ! কমল বলিল, না । কিন্তু তার ফিরতে এখনও দেরি আছে। কেন ? পাড়াটা এখনো নিঃশেষ হয়নি। যারা অবশিষ্ট আছে তাদের রওনা না করে দিয়ে তিনি ছুটি নেবেন না, এই তার পণ । আগুবাবু তাহার মুখের দিকে চাহিয়া প্রশ্ন করিলেন, তা হলে তোমার বা কি, করে ছুটি হ’লে ? আবার কি সেখানে ফিরতে হবে ? নিষেধ করতে পারিনে, কিন্তু সে যে বড় ভাবনার কথা কমল ? কমল মাথা নাড়িয়া বলিল, ভাবনার জন্য নয় আপ্তবাবু, ভাবনা আর কোথায় নেই ? কিন্তু আমার ঘড়িতে যেটুকু দম ছিল সমস্ত শেষ করে নিয়েই এসেচি। সেখানে ফিরে যাবার সাধ্য আমার নেই। শুধু রয়ে গেলেন রাজেন। একএকজনের দেহ-যন্ত্রেও প্রকৃতি এমনি অফুরন্ত দম দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন যে, সে না হয় কথন শেষ, না যায় কখন বিগড়ে। এই লোকটি তাদেরই একজন। প্রথম প্রথম মনে হ’তো এই ভয়ানক পল্লীর মাঝখানে এ বাঁচবে কি করে ? ক’দিনই বা বাঁচবে। সেখান থেকে একলা যখন চলে এলুম কিছুতেই যেন আর ভাবনা ঘোচে ১৬৫