পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন সম্মুখের খোলা জানাল দিয়া দেখা গেল পূবের আকাশ স্বচ্ছ হইয়া আসিয়াছে। . অজিতবাবু, ঘুমোবার বোধ করি আর সময় নেই। না, এইবার উঠি । বলিয়া সে চোখ মুছিয়া উঠিয়া বসিল । షిప్పి সংসারে সাধারণের একজন মাত্র, এর বেশি দাবি আগুবাবু বোধ করি তার স্বাক্টকর্তার কাছে একদিনও করেন নাই। পৈতৃক বিপুল ধন-সম্পদও যেমন শান্ত আনন্দের সহিত গ্রহণ করিয়াছিলেন, বিরাট দেহ-ভার ও আনুষঙ্গিক বাত-ব্যাধিটাও তেমনি সাধারণ দুঃখের মতই স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন। জগতের সুখ-দুঃখ যে বিধাতা তাহাকেই লক্ষ্য করিয়া গড়েন নাই, তাহারা স্ব স্ব নিয়মেই চলে—এ সত্য শুধু বুদ্ধি দিয়া নয়, হৃদয় দিয়া উপলব্ধি করিতেও তাহাকে তপস্যা করিতে হয় নাই, সহজাত সংস্কারের মতই পাইয়াছিলেন। একদিন আকস্মিক স্ত্রী-বিয়োগের দুর্ঘটনাম সন্ত পৃথিবী যখন চোখের সন্মুখে শুষ্ক হইয়া দেখা দিল, সেদিনও যেমন ভাগ্য-দেবতাকে অজস্র ধিক্কারে লাঞ্ছিত করেন নাই, একান্ত স্নেহের ধন মনোরমাও যেদিন তাহার সমস্ত আশা-ভরসায় আগুন ধরাইয়া দিল সেদিনও তেমনি মাথা খুড়িয়া কাদিতে বসেন নাই। ক্ষোভ ও দুঃসহ নৈরাখের মাঝখানেই তাহার মনের মধ্যে কে যেন অত্যন্ত পরিচিত কণ্ঠে বার বার করিয়া বলিতে থাকিত যে, এমনি হয়। এমনি দুঃখ, বহু মানবের ভাগ্যে বহুবার ঘটিয়াছে, এমনি করিয়াই সংসার চলে। ইহার কোথাও নূতনত্ব নাই—ইহা স্বষ্টির মতই স্বপ্রাচীন। উচ্ছসিত শোকের তরঙ্গ তুলিয়া ইহাকেই নবীন করিয়া সংসারে পরিব্যাপ্ত করায় না আছে পৌরুষ, না আছে প্রয়োজন। তাই সৰ্ব্ববিধ দুঃখই তাহাতে আপনিই শান্ত হইয়া চারিদিকে এমনৃএকটি মিথপ্রচ্ছন্নতার বেষ্টনী স্বজন করিত যে, ভিতরে আসিলে সকলের সকল বোঝাই যেন আপনা হইতে লঘু ও অকিঞ্চিৎকর হইয়া যাইত। * • ‘ . এইভাবে আগুবাবুর চিরদিন কাটিয়াছে। আগ্রায় আসিয়াও নানা বিপৰ্য্যয়ের মৃধ্যে ইহার ব্যত্যয় ঘটে নাই, অথচ এই ব্যতিক্রমটুকুই চোখে পড়িতে লাগিল আজকাল இல்,