পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন আপ্তবাবু উত্তেজনা চাপিতে পারিলেন না, কারণ অস্বীকার করার যে নাই বলিয়া এই কথাটাই মনের মধ্যে র্তাহার অহৰ্নিশি পাক খাইয়াছে। বলিলেন, তা জানি, কুিষ্ক মেয়েরও জান চাই যে বাপের চেয়ে বড় হয়ে ওঠা যায় না। শুধু মতামতটাই আমার নিজের নয় কমল, সম্পত্তিটাও নিজের। আগুবষ্ঠির দুৰ্ব্বলতার পরিচয়টাই লোকের অভ্যাস হয়ে গেছে, কিন্তু তার আরও একটা দিক আছে—সেটা লোকে ভুলেচে । কমল তাহার মুল্পের পানে চাহিয়া স্নিগ্ধকণ্ঠে বলিল, আপনার সে-দিকটা যেন লোকে ভুলেই থাকে আগুবাবু। কিন্তু তাও যদি না হয়, পরিচয়টা কি সৰ্ব্বাগ্রে দিতে হবে নিজের মেয়ের কাছেই ? ই, অবাধ্য মেয়ের কাছে। এই বলিয়া তিনি একমুহূৰ্ত্ত নীরব থাকিয়া বলিলেন, মা-মরা আমার ঐ একমাত্র সন্তান, কি করে যে মানুষ করেচি সে শুধু তিনিই জানেন যিনি পিতৃহৃদয় স্বষ্টি করেচেন। এর ব্যথা যে কি তা মুখে ব্যক্ত করতে গেলে তার বিকৃতি কেবল আমাকে নয়, সকল পিতার পিতা যিনি র্ত্যকে পর্য্যন্ত উপহাস করবে। তা ছাড়া তুমি বুঝবেই বা কি করে ? কিন্তু পিতার স্নেহই তো শুধু নয় কমল, তার কর্তব্যও তো আছে ? শিবনাথকে আমি চিনতে পেরেচি। তার সর্বনেশে গ্রাস থেকে মেয়েকে রক্ষে করতে পারি এ-ছাড়া আর কোন পথই আমার চোখে পড়ে না । কাল তাদের চিঠি লিখে জানাবো এর পরে মণি যেন না আমার কাছে একটি কপর্দকও আশা করে। இ. কিন্তু এ-চিঠি যদি তারা বিশ্বাস করতে না পারে? যদি ভাবে এ রাগ বাবার বেশিদিন থাকবে না, সেদিন নিজের অবিচার তিনি নিজেই সংশোধন করবেন, তা হলে ? তা হলে তারা তার ফল ভোগ করবে । লেখার দায়িত্ব আমার, বিশ্বাস করার দায়িত্ব তাদের । এই কি আপনি সত্যই স্থির করেচেন ? ई ॥ কমল নীরবে বসিয়া রহিল। উদ্‌গ্ৰীব প্রতীক্ষায় আপ্তবাবু নিজেও কিছুক্ষণ নিঃশব্দে থাকিয় মনে মনে ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন। বলিলেন, চুপ করে রইলে যে কমল, জবাব দিলে না ? কই, প্রশ্ন তো কিছুই করেননি ? সংসারে একের সঙ্গে অপরের মতের মিল না হলে যে শক্তিমান সে দুর্বলকে দও দেয়। এ ব্যবস্থা প্রাচীনকাল থেকে চলে আসচে। এতে বলবার কি আছে ? כס\b