পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কঠিন প্রশ্ন। কমল বলিল, বাস্তবিক একটাও দেখিনি এবং আপনাদেরটা ছাড়া কোনটার সঙ্গে কোন পরিচয়ই নেই। তবে ? কমল হাসিমুখে কহিল, চোখে কি সমস্তই দেখা যায় ? আপনাদের আশ্রমের শ্রম করাটাই চোখে দেখে এলাম, কিন্তু বৃহৎ বস্তু লাভের ব্যাপারটা আড়ালেই রয়ে গেল । সতীশ কহিল, আপনি আবার উপহাস করচেন। তাহার ক্রুদ্ধ মুখের চেহারা দেখিয়া হরেন্দ্র স্নিগ্ধস্বরে বলিল, ন ন সতীশ, উপহাস নয়, উনি রহস্য করচেন মাত্র। ওটা ওঁর স্বভাব। সতীশ কহিল, স্বভাব ! স্বভাব বললেই ত কৈফিয়ৎ হয় না হরেনদা । ভারতের অতীত দিনের যা নিত্য-পূজনীয়, নিত্য-আচরণীয় ব্যাপার তাকেই অবমাননা, তাকেই অশ্রদ্ধা দেখান হয়। একে তো উপেক্ষা করা চলে না । হরেন্দ্র কমলকে দেখাইয়া কহিল, এ বিতর্ক ওঁর সঙ্গে বহুবার হয়ে গেছে। উনি বলেন, অতীতের কোন দায় নেই। বস্তু অতীত হয় কালের ধৰ্ম্মে, কিন্তু তাকে হতে হয় নিজের গুণে। শুধু মাত্র প্রাচীন বলেই সে পূজ্য হয়ে ওঠে না। যে বর্বর জাত একদিন তার বুড়ো বাপ-মাকে জ্যাস্ত পুতে ফেলতো, আজও যদি সেই প্রাচীন অনুষ্ঠানের দোহাই দিয়ে সে কৰ্ত্তব্য নির্দেশ করতে চায় তাকে তো ঠেকান যায় না সতীশ । সতীশ ক্রুদ্ধ উচ্চ-কণ্ঠে বলিয়া উঠিল, প্রাচীন ভারতীয়ের সঙ্গে তো বৰ্ব্বরের তুলনা হয় না হরেনদা । হরেন বলিল, সে আমি জানি। কিন্তু ওটা যুক্তি নয় সতীশ, ওটা গলার জোরের ব্যাপার। সতীশ অধিকতর উত্তেজিত হইয়া কহিল, আপনাকেও যে একদিন নাস্তিকতার ফাদে পড়তে হবে এ আমরা ভাবিনি হরেনদা । হরেক্স কহিল, তুমি জানো আমি নাস্তিক নই। কিন্তু গাল দিয়ে শুধু অপমান করা যায় সতীশ, মতের প্রতিষ্ঠা করা যায় না । শক্ত কথাই সংসারে সবচেয়ে দুর্বল। 驅 সতীশ লজ্জা পাইল। ষ্টেট হইয়া হাত দিয়া তাহার পা ছুইয়া মাথায় ঠেকাইল কহিল, অপমান করিনি হরেনদা । আপনি তো জানেন আপনাকে কত ভক্তি করি আমরা; কিন্তু কষ্ট পাই যখন শুনি ভারতের শাশ্বত তপস্তাকেও আপনি অবিশ্বাস করেন। একদিন যে-উপাদান যে-সাধন দিয়ে তারা এই ভারতের বিরাট জাতি Հ8\ֆ