পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেৰ প্রশ্ন তোমাকে আহ্বান করায় সতীশ স্থানটাকে কলুষিত জ্ঞান করেছিল। কিন্তু আজ আমরা সবাই আমন্ত্রিত, কারও আসায় বাধা নেই— • একটি ছেলে কবাটের কাছে আসিয়া দাড়াইল। পরণে পরিচ্ছন্ন ভদ্র পোষাক; মুখে আনন্দ ও পরিতৃপ্তির আভাস ; কহিল, দিদি বলচেন, খাবার তৈরি হয়ে গেছে, ঠাই হবে ? অক্ষয় বলিল, হবে বই কি হে। বল গে, রাতও তো হলো। ছেলেটি চলিয়া গেলে হরেন্দ্র কহিল, বৌঠাকরুশ আসা পর্য্যস্ত খাবার চিন্তাটা আর কারুকে করতে হয় না, ওঁর তো কোথাও জায়গা ছিল না, কিন্তু সতীশ রাগ করে চলে গেল । আশুবাবুর মুখ মুহূৰ্ত্তের জন্ত রাঙা হইয়া উঠিল। হরেন্দ্র বলিতে লাগিল, অথচ সতীশেরও অন্ত উপায় ছিল না । সে ত্যাগী, ব্রহ্মচারী—এ-সম্পর্কে তার সাধনার বিস্তু । কিন্তু আমরাই যে সত্যিই কোন কাজটা ভাল হ’লো সব সময়ে ভেবে পাইনে । কমল অকুষ্ঠিত-স্বরে বলিল, এই কাজটাই হরেনবাবু, এই কাজটাই । সংযম যখন সহজ না হয়ে অপরকে আঘাত করে তখনই সে হয় দুৰ্ব্বহ । এই বলিয়া লে পলকের জষ্ঠ আগুবাবুর প্রতি চাহিল, হয়ত কি একটা গোপন ইঙ্গিত ছিল, কিন্তু হরেন্দ্রকেই পুনশ্চ বলিল, ওরা নিজেকেই টেনে টেনে বাড়িয়ে ওদের ভগবানকেই স্বাক্ট করে। তাই ওদের ভগবানের পূজো বারে বারেই ঘাড় হেঁট করে আত্মপুজোয় নেমে আসে। এ-ছাড়া ওদের পথ নেই। মানুষ তো শুধু কেবল নরও নয়, নারীও নয়, এ দুয়ে মিলেই তবে সে এক। এই অৰ্দ্ধেককে বাদ দিয়ে যখনি দেখি সে নিজেকে বৃহৎ করে পেতে চায়, তখন দেখি সে আপনাকেও পায় না, ভগবানকেও ক্ষেীয়ায় । সতীশবাবুদের জন্য দুশ্চিন্তা রাখবেন না হরেনবাবু, ওঁদের সিদ্ধি স্বয়ং ভগবানের জিন্মায় । সতীশকে প্রায় কেহই দেখিতে পারিত না, তাই শেষের কথাটায় সবাই হাসিল । আপ্তবাবুও হাসিলেন, কিন্তু বলিলেন, আমাদের হিন্দুশাস্ত্রের একটা বড় কথা আছে কমল—আত্মদর্শন। অর্থাৎ আপনাকে নিগূঢ়ভাবে জানা। ঋষির বলেন, এই খোজার মধ্যেই আছে বিশ্বের সকল জানা, সকল জ্ঞান। ভগবানকে পাবারও এই • পথ। এরই তরে ধ্যানের ব্যবস্থা। তুমি মানো না ; কিন্তু যার মানে, বিশ্বাস করে, র্তাকে চায়, জগতের বহু বিষয় থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে না রাখলে তারা একাগ্র চিত্ত-যোজনায় সফল হয় না। সতীশকে আমি ধরিনে, কিন্তু এ যে হিন্দুর অচ্ছিন্ন ૨૭૭