পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বললুম ধাও— সে বললে, নির্বিবয়ে পার না করে দিয়ে কি আর যেতে পারি । বললুম, তুমি কি আমার পারের কাণ্ডারী ? 曝 g" আমি আজও ভেবে পাইনি, এ-কথা কি করেই বা মনে এলো এবং কেমন করেই বা মুখ দিয়ে বার করলুম। কিন্তু সে যখন আমার মুখপানে চেয়ে একটু হেলে বললে, দেখি, তাই যদি হতে পারি—আমি ঘেন্নায় যেন মরে গেলুম। , সেখানে এসে দেখি, পার হওয়া সোজা নয়। একে ত স্থানটা গাছের ছায়ায় অন্ধকার, তাতে পিটুলি গাছটাই জলে ভিজে ভিজে যেমন পিছল তেমনই উচু-নীচু হয়ে আছে। তলা দিয়ে সমস্ত বৃষ্টির জল হু হু শব্দে বয়ে যাচ্ছে, আমি একবার প৷ বাড়াই, একবার টেনে নিই। নরেন থানিকক্ষণ দেখে বললে, আমার হাত ধরে যেতে পারবে ? - বললুম, পারব। কিন্তু তার হাত ধরে এমনি কাও করলুম যে, সে কোনমতে টাল সামলে এদিকে লাফিয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করলে। কয়েকমুহূৰ্ত্ত সে চুপ করে আমার মুখপানে চেয়ে রইল, তার পরেই তার চোখ দুটো যেন ঋক্ ঝকু করে উঠল। বললে, দেখবে, একবার সত্যিকারের কাণ্ডারী হতে পারি কি না? আশ্চৰ্য্য হয়ে বললুম, কি করে ? ای এমনি করে, বলেই সে নত হয়ে আমার দুই হাটুর নীচে এক হাত, ঘাড়ের নীচে অন্ত হাত দিয়ে চোখের নিমিষে তার বুকের কাছে তুলে নিয়ে সেই গাছটার উপর পৃ দিয়ে দাড়াল। ভয়ে আমি চোখ বুজে বা হাত দিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরলুম। নরেন দ্রুতপদে পার হয়ে এপারে চলে এল। কিন্তু নামাবার আগে আমার ঠোঁট দুটোকে একেবারে যেন পুড়িয়ে দিলে। কিন্তু থাকু গে! কম যেঙ্গায় কি আর এ-দেহের প্রতি অঙ্গ অহৰ্নিশি গলায় দড়ি দিতে চায়। শিউরুতে শিউরুতে বাড়ি চলে এলুম, ঠোট দুটো তেমনি জলতেই লাগল বটে, কিন্তু সে জালা লঙ্কামরিচথোরের জলুনির মত যত জলতে লাগল জালার তৃষ্ণ তত বেড়ে যেতেই লাগল । , মা বললেন, ভালো মেয়ে তুই সদ্ধ, এলি কি করে ? নালাটা ত জলে জলমগ্ন হয়েচে দেখে এলুম। সেই গাছটার ওপর দিয়ে বুঝি হেঁটে এলি ? পড়ে মরতে পারলিনে ? না মা ; সে পুণ্য থাকলে আর এ গল্প লেখবার দরকার হবে কেন ? তার পরদিন নরেন মামার সঙ্গে দেখা করতে এল। আমি সেইখানেই বসেছিলুম, তার পানে চাইতে পারলুম না, কিন্তু আমার সর্বাঙ্গে কাটা দিয়ে উঠল। 39%",