পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য সংগ্ৰহ এখন কতবার মনে হয়, ছেলেবেলা থেকে কাজের আকাজের কত বই পড়ে কত কথাই শিখেছিলুম, কিন্তু এ-কথাটা কোথাও যদি শিখতে পেতুম, পৃথিবীতে তুচ্ছ একটি কথা গুছিয়ে না বলবার দোষে, ছোট একটি কথা মুখ ফুটে না বলবার অপরাধে, কত শত ঘর-সংসারই না ছারখার হয়ে যায়। হয়ত, তা হলে এ-কাহিনী লেখবার আজ আবশ্যকই হ’ত না । তাই ত, বার বার বলি, ওরে হতভাগী ! এত শিখেছিলি, এটা শুধু শিখিসনে, মেয়েমানুষের কার মানে মান ! কার হতাদরে তোদের মানের অট্টালিকা তাসের অট্টালিকার মতই এক নিমিষে একটা ফুয়ে ধূলিসাৎ হয়ে যায় । তবে তোর কপাল পুড়বে না ত পুড়বে কার ? সমস্ত সন্ধ্যাবেলাটা ঘরে খিল দিয়ে যদি সাজ-সজ্জাই করলি, অসময়ে ঘুমের ভাণ করে যদি স্বামীর পালঙ্কের একধারে গিয়ে গুতেই পারলি, তাকে একটা সাড়া দিতেই কি তোর এমন কণ্ঠরোধ হ’ল ! তিনি ঘরে ঢুকে দ্বিধায় সঙ্কোচে বার বার ইতস্তত: করে যখন বেরিয়ে গেলেন, একটা হাত বাড়িয়ে তার হাতটা ধরে ফেলতেই কি তোর হাতে পক্ষাঘাত হ’ল ? সেই ত সারারাত্রি ধরে মাটিতে পড়ে পড়ে কাদলি, একবার মুখ ফুটে বলতেই কি শুধু এত বাধা হ’ল যে, আচ্ছা, তুমি তোমার বিছানাতে এসে শোও, আমি আমার ভূমিশয্যায় না হয় ফিরে যাচ্ছি । অনেক বেলায় যখন ঘুম ভাঙল, মনে হ’ল যেন জর হয়েচে। উঠে বাইরে যাচ্ছি, স্বামী এসে ঘরে ঢুকলেন। আমি মুখ নীচু করে একপাশে দাড়িয়ে রইলুম, তিনি বললেন, তোমাদের গ্রামের নরেনবাবু এসেচেন। বুকের ভেতরটায় ধ্বক্ করে উঠল। স্বামী বলতে লাগলেন, আমাদের নিখিলের তিনি কলেজের বন্ধু। চিতোর বিলে ইসি শিকার করবার জন্ত কলকাতায় থাকতে সে বুঝি কবে নেমস্তন্ন করে এসেছিল, তাই এসেচেন । তুমিও তাকে বেশ চেন, না ? , উঃ, মামুষের স্পৰ্দ্ধার কি একটা সীমা থাকতে নেই! ঘাড় নেড়ে জানানুষ, আছে। কিন্তু স্বশায় লজ্জায় নখ থেকে চুল পর্যন্ত আমার তেতো হয়ে গেল । স্বামী বললেন, তোমার প্রতিবেশীর আদর যত্বের ভার তোমাকেই হবে । * . 壘 \o)evo