পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুনে এমনি চমকে উঠলুম যে, ভয় হ’ল হয়ত আমার চমকটা তার চোখে পড়েচে । কিন্তু এদিকে তার দৃষ্টি ছিল না। বললেন, কাল রাত্রি থেকেই মায়ের বাতটা ভয়ানক বেড়েচে । এদিকে নিখিলও বাড়ি নেই, অখিলকেও তার আফিস করতে হবে। মুখ নীচু করে কোনমতে বললুম, তুমি ? আমার কিছুতেই থাকবার যে নেই। রায়গঞ্জে পাট কিনতে না গেলেই ময়। কখন ফিরবে ? ফিরতে আবার কাল এই সময়। রাত্রিটা সেইখানে থাকতে হবে। তা হলে আর কোথাও তাকে যেতে বল। আমি বেী-মানুষ, শ্বশুরবাড়িতে র্তার সামনে বার হতে পারব না । স্বামী বললেন, ছি, তা কি হয়। আমি সমস্ত ঠিক করে দিয়ে যাচ্চি, তুমি সামনে না বার হও, আড়াল থেকে গুছিয়ে-গাছিয়ে দিয়ে। এই বলে তিনি বাইরে চলে গেলেন । সেইদিন পাচ মাস পরে আবার নরেনকে দেখলুম। দুপুরবেলা সে খেতে বসেছিল, আমি রান্নাঘরের দোরের আড়ালে বসে কিছুতেই চোখের কৌতুহল খামাতে পারলুম না। কিন্তু চাইবামাত্রই আমার সমস্ত মনটা এমন একপ্রকার বিতৃষ্ণায় ভরে গেল যে, সে পরকে বোঝানো শক্ত। মস্ত একটা তেঁতুলবিছে একে-বেঁকে চলে যেতে দেখলে সৰ্ব্বাঙ্গ যেমন করে ওঠে, অথচ যতক্ষণ সেটা দেখা যায়, চোখ ফিরুতে পারা যায় না, ঠিক তেমনি করে আমি নরেনের পানে চেয়ে রইলুম। ছি, ছি, ওর ওই দেহটাকে কি করে যে একদিন ছুয়েচি, মনে পড়তেই সৰ্ব্বশরীর কাটা দিয়ে মাথার চুল পৰ্য্যন্ত আমার খাড়া হয়ে উঠল। খেতে খেতে সে মাঝে মাঝে চোখ তুলে চারিদিকে কি যে খুজছিল, সে আমি জানি। আমাদের রাঁধুনী কি একটা তরকারি দিতে গেল, সে হঠাৎ ভারি আশ্চৰ্য্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ই গা, তোমাদের বড়বে যে বড় বেরুলো না ? রাধুনী জানত যে, ইনি আমাদের বাপের বাড়ির লোক—গ্রামের জমিদার। তাই বোধ করি খুশি করবার জন্তেই হাসির ভঙ্গিতে একঝুড়ি মিথ্যে কথা বলে তার মন যোগালে। বললে, কি জানি বাবু, বড়বৌমার ভারি লজ্জা, নইলে তিনিই ত আপনার জষ্ঠে আজ নিজে রাধলেন। রান্নাঘরে বসে তিনিই ত আপনার সব খাবার এগিয়ে গুছিয়ে দিচ্চেন। লক্ষ্ম করে কিন্তু কম-সম খাবেন মা বাবু, তা হলে তিনি বড় রাগ করবেন, আমাকে বলে দিলেন । 疊 We Q ఇః=ళిని