পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী নরেনের চিঠি ! না পড়েই যদি ছিড়ে ফেলতে পারব, তা হলে মেয়েমানুষের মনের মধ্যে বিশ্বের সেই অফুরন্ত চিরন্তন কৌতুহল জমা হয়ে রয়েচে কিসের জন্তে ? নির্জন পুকুরঘাটে জলে পা ছড়িয়ে দিয়ে চিঠি খুলে লুম। অনেকক্ষণ পৰ্যন্ত. একটা কথাও পড়তে পারলুম না। চিঠি লাল কালিতে লেখা মন হতে লাগল, তার রাঙা অক্ষরগুলো যেন একপাল কেন্নোর বাচ্চার মত গায়ে গায়ে জড়িয়ে কিলবিল করে নড়ে নড়ে বেড়াচ্চে। তার পরে পড়লুম—একবার, দু’বার, তিনবার পড়লুম। তার পরে টুকরো টুকরো করে ছিড়ে জলে ভাসিয়ে দিয়ে স্নান করে ঘরে ফিরে এলুম। কি ছিল তাতে ? সংসারে যা সবচেয়ে বড় অপরাধ, তাই লেখা ছিল। ধোপা এসে বললে, মাঠাকরুণ বাবুর ময়লা কাপড় দাও । জামার পকেটগুলো সব দেখে দিতে গিয়ে একখানা পোষ্টকার্ড বেরিয়ে এল, হাত তুলে দেখি, আমার চিঠি, মা লিখেচেন । তারিখ দেখলুম, পাচদিন আগের, কিন্তু আজও আমি পাইনি । 劇 পড়ে দেখি সৰ্ব্বনাশ! মা লিখেচেন, শুধু রান্নাঘরটি ছাড়া আর সমস্ত পুড়ে ভস্মসাৎ হয়ে গেছে । এই ঘরটির মধ্যে কোনমতে সবাই মাথা গুজে আছেন। দু'চোখ জালা করতে লাগল, কিন্তু একফোটা জল বেরুল না। কতক্ষণ যে এভাবে বসেছিলুম জানিনে, ধোপার চীৎকারে আবার সজাগ হয়ে উঠলুম। তাড়াতাড়ি তাকে কাপড়গুলো ফেলে দিয়ে বিছানায় এসে গুয়ে পড়লুম। এইবার চোখের জলে বালিস ভিজে গেল। কিন্তু এই কি তার ঈশ্বরপরায়ণতা ! আমার মা গরীব, একবিন্দু সাহায্য করতে অনুরোধ করি, এই ভয়ে চিঠিথান পৰ্য্যন্ত আমাকে দেওয়া হয়নি। এতবড় ক্ষুদ্রতা আমার নাস্তিক মামার দ্বারা কি কখনো সম্ভব স্থা, পারত ! আজি তিনি ঘরে আসতে কথা কইলুম। বললুম, আমাদের বাড়ি - গেছে ? তিনি মুখপানে চেয়ে বললেন, কোথায় শুনলে ? গায়ের ওপর পোষ্টকার্ডখান ছুড়ে ফেলে দিয়ে জবাব দিলুম, ধোপাকে কাপড় দিতে তোমারই পকেট থেকে পেলুম। দেখ, আমাকে নাস্তিক বলে তুমি ঘৃণা কর জানি, কিন্তু যারা লুকিয়ে পরের চিঠি পড়ে, আড়ালে গোয়েন্দাগিরি করে বেড়ায়, তাদের আমরাও ঘৃণা করি । তোমার বাড়িগুদ্ধ লোকেরই কি এই ব্যবসা ? ষে লোক নিজের অপরাধে মগ্ন হয়ে আছে, তার মুখের এই কথা ! কিন্তু আমি নিঃসংশয়ে বলতে পারি, এতবড় স্পৰ্দ্ধিত আঘাত আমার স্বামী ছাড়া আর কেউ সহ \రీృa a = 8 e