পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्वांशौ ঘরে ফিরে এসে আর একবার মাটির উপর লুটিয়ে পড়ে কাদতে কঁদিতে বললুম, ভগবান । কখনো তোমাকে ডাকিনি, আজ ডাকচি, তোমার একান্ত নিরুপায় মহাপাপিষ্ঠ সন্তানের গতি করে দাও । আমার সে-ডাক কত প্রচও, তার শক্তি যে কি দুৰ্নিবার, আজ সে শুধু আমিই छांनि । তবু সাতদিন কেটে গেল । কিন্তু কেমন করে যে কাটল, সে ইতিহাস বলবার আমার সামর্থ্যও নেই, ধৈর্য্যও নেই। সে যাক । বিকেলবেলায় আমার ওপরে ঘরের জানালায় বসে নীচে গলির পানে তাকিয়ে ছিলুম। আফিসের ছুটি হয়ে গেছে, সারাদিনের খাটুনির পর বাবুর বাড়িমুখে৷ হন হন করে চলেচে। অধিকাংশই সামান্ত গৃহস্থ। তাদের বাড়ির ছবি আমার চোখের ওপর স্পষ্ট ফুটে উঠল । বাড়ির মেয়েদের মধ্যে এখন সবচেয়ে কারা বেশি ব্যস্ত, জলখাবার সাজাতে, চা তৈরি করতে সবচেয়ে কারা বেশি ছুটোছুটি করে বেড়াচ্চে, সেটা মনে হতেই বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। মনে পড়ল, তিনিও সমস্তদিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর বাড়ি ফিরে এলেন । কোথায় কাপড়, কোথায় গামছা, কোথায় জল ৷ ডাকাডাকির পর কেউ হয়ত সাড়াও দিলে না । তার পরে, হয়ত মেজদেওরের খাবারের সঙ্গে তারও একটুখানি জলখাবারের যোগাড় মেজবেী করে রেখেচে, না হয় ভুলেই গেছে। আমি ত আর নেই, ভুলতে ভয়ই বা কি : হয়ত বা শুধু এক গেলাস জল চেয়ে খেয়ে ময়লা:বিছানাটা কেঁচা দিয়ে একটু ঝেড়ে নিয়ে গুয়ে পড়বেন । তার পরে, রাত-দুপুরে দুটো শুকনো ঝরঝরে ভাত, একটু ভাতে-পোড়া। ওবেলার একটুখানি ডাল হয়ত বা আছে, হয়ত বা গেছে---স্কুলের দিয়ে-থুয়ে দুধ একটু বীচে ত সে পরম ভাগ্য। নিরীহ ভালোমাচুৰ্য, কাউকে কড়া-কথা ধরতে পারেন না, কারে ওপর রাগ দেখাতে জানেন না— ওরে মহাপাতকি । এতবড় শির মহাপাপ তোর চেয়ে বেশি সংসারে কেউ কি কোনদিন করেচে । ইচ্ছে হ’ল ! ' শব্দতে মাথাটা ছেচে ফেলে সমস্ত ভাবনা-চিন্তার এইখানেই শেষ করে দিই। আমি কি ? 源 বোধ করি অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত কোনদিকেই চোখ ছিল না, হঠাৎ কড়ানাড়ার শব্দে চমকে উঠে দেখি, সদর দরজায় দাড়িয়ে নরেন আর মুক্ত। তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ফেলে নিজের বিছানায় উঠে এসে বসলুম ; সেইদিন থেকে নরেন আর আসেনি। আমার সমস্ত মন যে কোথায় পড়ে আছে সে নিঃসংশয়ে বুঝতে পেরেছিল বলে ভয়ে এদিক মাড়াত না। তার নিজের ধারণা জন্মেছিল, বিপদে পড়লে স্বামীর বিরুদ্ধে SS ع