পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন কিন্তু বাড়ির দাসী-চাকরকে বসুন বলে অভ্যর্থনা করতেও পারব না, আসুন বলে বিদায় দিতেও পারব না। নিজের বাড়িতে হলেও না । এর পরে আর বলবার আছে কি ! বসিবার কি আছে অবিনাশ নিজেও ভাবিয়া পাইলেন না, শুধু মৃদুকণ্ঠে কছিলেন, বলা কঠিন আগুবাবু। কিন্তু মনে হয় যেন মনোরম ঠিক কথাই বলেচেন। এইসব স্ত্রীলোকদের সঙ্গে আমাদের ঘরের মেয়েদের আলাপ-পরিচয় না থাকাই ভাল । আগুবাবু চুপ করিয়া রছিলেন। অবিনাশ বলিতে লাগিলেন, শিবনাথের সঙ্কোচের কারণও বোধ করি এই । সে জ্ঞ জানে সবই, তার ভয় ছিল পাছে কোন বিশ্ৰী কদৰ্য্য বাক্য তার স্ত্রীর মুখ দিয়ে বার হয়ে যায় । আগুবাবু হাসিলেন, হতেও পারে। অবিনাশ কহিলেন, নিশ্চর্য এই । আশুবাবু প্রতিবাদ করিলেন না, শুধু কছিলেন, মেয়েটি কিন্তু লক্ষ্মীর প্রতিমা । এই বলিয়া ছোট একটু নিশ্বাস ফেলিয়। আরাম-কেদারায় হেলান দিয়া শুইলেন। কয়েকমুহূৰ্ত্ত নীরব থাকিয়া অবিনাশ কহিলেন, আমার কথায় কি আপনি ক্ষুন্ন হলেন ? আগুবাবু উঠিয়া বসিলেন না, তেমনি অৰ্দ্ধশায়িতভাবে থাকিয়াই ধীরে ধীরে বলিলেন, ক্ষুণ্ণ নয় অবিনাশবাবু, কিন্তু কেমন একটা ব্যথার মত লেগেচে । তাই তু আপনার সঙ্গে দেখা করবার জন্য এমন ছট্‌ফট্‌ করছিলাম। কি মিষ্টি কথা মেয়েটির— শুধু রূপই নয়। অবিনাশ সহাস্তে উত্তর দিলেন, কিন্তু আমি ত তার রূপও দেখিনি, কথাও শুনিনি আপ্তবাবু! আপ্তবাবু বলিলেন, কিন্তু সে সুযোগ যদি কখনো হয় ত তাদের ত্যাগ করার অবিচারটা বুঝবেন। আর কেউ না বুঝুক আপনি বুঝতে পারবেন এ আমি নিশ্চয় জানি । যাবার সময় মেযেটি আমাকে বললে, আপনি আমার স্বামীর গান শুনতে ভালবাসেন, কেন তাকে মাঝে মাঝে ডেকে পাঠান না ? আমি যে কেউ আছি এ-কথা না-ই বা মনে করলেন । আমি ত আপনাদের মধ্যে আসবার দাবি করিনে । অবিনাশ কিন্তু আশ্চৰ্য্য হইলেন, বলিলেন, এ ত খুব অশিক্ষিতের মত কথা নয় আপ্তবাবু? শুনলে মনে হয় তার নিজের সম্বন্ধে যে ব্যবস্থাই আমরা করি, স্বামীটিকে সে ভদ্র-সমাজে চালিয়ে দিতে চায় । 을 సెళె=8