পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপ্রকাশিত রচনাবলী শেষকালে একদিন রাজপুত্তর দেখা দিলেন। সেদিন কি ঘুমেই ন পেয়েছিল আমাকে । কত কথা তিনি বলেছিলেন ; তার মানে তখন বুঝিনি। এখনই কি ছাই বুঝতে পেরেছি ! তিনি বললেন, আবার দেখা হবে ; কবে তা বলেননি। বলেছেন, তিনি আমাকে ছেড়ে কোথাও থাকতে পারবেন না। তিনি মান করেছেন—আমাকে সিথির সিদুর মুছতে—আমার হাতের চুড়ি খুলে ফেলতে। তাই এই সিদুর—তাই আজও এই পোড়া হাত-দুটোতে সোনার চুড়ি ঝকৃঝক্‌ করে। এখন তোমরা কি কেউ দয়া করে আমাকে বলতে পার, কবে তিনি আসছেন ? ও কি ! তোমরাও যে অবাক হয়ে চেয়ে রইলে ! চোখের অমন উদাস চাউনি যে আমি সইতে পারিনে ! ওগো, তোমরা কি সব ছবি ? কথা কও না ? হায় হায়—এ কোন দেশে তুমি আমায় রেখে গেছ, কুমার ? ও মা ! চোখের কোণে তোমাদের ও কি গা ? জল নয় ত? সে কি, তোমরাও কথা কইবে না ? তবে কে আশায় বলে দেবে— কবে তুমি আসবে কুমার ? ৱসচক্র রাজশাহী শহরের ক্রোশ-কয়েক দূরে বিরজাপুর গ্রাম। গ্রামটি বড়,—বহু ঘর ব্রাহ্মণ বৈষ্ঠ কায়ন্থের বাস। কিন্তু মৈত্র-বংশের সততা, সাধুতা এবং স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠার খ্যাতি গ্রাম উপচাইয়া শহর পর্য্যস্ত ছড়াইয়া পড়িয়াছিল। ইহাদের বিষয়-সম্পত্তি যাহা ছিল, তাহাতে মোট ভাত-কাপড়টাই কোনমতে চলিতে পারিত, কিন্তু তাহার অধিক নয়। অথচ ক্রিয়া-কলাপ কোনটাই বাদ পড়িবার যে ছিল না। অনেকখানি স্থান ব্যাপিয়া ভদ্রাসন, অনেকগুলি মেটে খোড়ে ঘর, মন্তবড় চণ্ডীমণ্ডপ ;–ইহার সকলগুলিই সকল সময়েই পরিপূর্ণ। কিন্তু এ-সব হইত কি করিয়া ? হইত, উপস্থিত তিন ভাই-ই উপার্জন করিতেন বলিয়। বড় শিবরতন গ্রামেই জমিদারী-রাজসরকারে ভাল চাকরি করিতেন ; সেজ শস্তৃরতন সেয়ারের গাড়ীতে জেলা আদালতে পেস্কার করিতে যাইতেন, 836.