পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপ্রকাশিত রচনাবলী দগ্ধ হইয়। যাইত। কাজকৰ্ম্ম অন্তে এই লইয়া প্রতি বৎসরেই কিছু-না-কিছু কলহবিবাদ হইতই । বিশেষ করিয়া মা আজও জীবিত আছেন এবং আজও তিনি গৃহিণী। কিন্তু বয়স অত্যন্ত বেশী হইয় পড়ায় অপরের দোষ-ত্রুটি দেখাইয়া তিরস্কার ও গালি-গালাজ করার কাজটুকু মাত্র হাতে রাখিয়া গৃহিণীপনার বাকী সমস্ত দায়িত্বই তিনি স্বেচ্ছায় বড় ও সেজ-বধুমাতার হাতে অর্পণ করিয়া নিশ্চিন্ত হইয়াছেন। তিনি ন'বোঁকে একেবারে দেখিতে পারিতেন না । সে সুন্দরী, সে বড়লোকের মেয়ে, তাহার কাপড়-গহনা প্রয়োজনের অতিরিক্ত, তাহাকে সংসার করিতে হয় না, সে চিঠি লিখিতে পারে, অহঙ্কারে তাহার মাটিতে পা পড়ে না, ইত্যাদি নালিশ এগারে মাস-কাল নিয়ত শুনিতে শুনিতে এই বধুটির বিরুদ্ধে মন র্তাহার তিক্ততায় পরিপূর্ণ হইয়া থাকিত ; এবং এই দীর্ঘকাল পরে সে যখন গৃহে প্রবেশ করিত, তখন তাহ অনধিকার-প্রবেশের মতই তাহার ঠেকিত । কাল হইতে একটা কথা উঠিয়াছে যে, ধরণী সাণ্ডেলদের বাড়ির মেয়েদের সরায় সন্দেশ দুটো করিয়া কম পড়িয়াছে, এবং কম পড়িয়াছিল কেবল তাহারা গরীব বলিয়াই। এই দুর্নাম শুধু গ্রামে নয়, তাহা শহর ছাড়াইয়া না-কি বিলাত পৰ্য্যন্ত পেছিবার উপক্রম করিয়াছে,--এই দুঃসংবাদ গৃহিণীর কানে গেল যখন তিনি আহিকে বসিতেছিলেন। তখন হইতে ছত্রিশ ঘণ্টা কাটিয়া গেছে,—মালাআহিকের যথেষ্ট বিঘ্ন ঘটিয়াছে, কিন্তু আলোচনার শেষ হইতে পায় নাই। দোষ শুধু ন’বৌমার এ-বিষয়েও যেমন কাহারও সংশয় ছিল না, এবং নিজে সে বড়লোকের মেয়ে বলিয়াই ইচ্ছা করিয়া দরিদ্র-পরিবারের অপমান করিয়াছে, ইহাতেও তেমনি কাহারও সন্দেহ ছিল না । ন’বেী যে সকল কথাই নীরবে সহ করিয়া যাইত তাহা নয়,—মাঝে মাঝে সেও উত্তর দিত, কিন্তু তাহার কোন উত্তরটাই সোজা শাশুড়ীর কানে পৌছিত না, পোছিত প্রতিধ্বনিত হইয়া । তাই তাহার বক্তব্যটা লোকের মুখে মুখে যা খাইয়া কেবল বিকৃতই হইত না, তাহার রেশটাও সহজে মিলাইতে চাহিত না । সকালে আজ বাটীর মধ্যে যখন এই অবস্থা—সাল্প্যাল-পরিবারের মিষ্টাল্পের নূ্যনতা লইয়া ন’বধূর সম্বন্ধে আলোচনা যখন তুমুল হইয়া উঠিয়াছে, বাহিরে তখন শিবরতন সেই ন’বধুমাতারই প্রশংসায়-মুক্তকণ্ঠ হইয়া উঠিয়াছিলেন। শিবরতন কহিলেন, বুধবারে ন'বোর্মাকেও সঙ্গে নিয়ে যাও । মা আমার আরও কিছুদিন এখানে থেকে যেতে পারলে যেখানের যা-সমস্ত গুছিয়ে-গাছিয়ে সারা 8ᎼᎽ సిā-&sరి