পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ আপ্তবাবু হাসিয়া বলিলেন, ভয় নেই মা, তোমার বুড়ে বাপকে কেউ চুরি করবে না । অবিনাশ কছিলেন, না, সে আশঙ্কা নেই। রীতিমত কপিকল লোহার চেন ইত্যাদি সংগ্রহ করে না আনলে তুলতে পারবে কেন ? মনোরম কহিল, আমার বাবাকে আপনার খুড়বেন না। আপনাদের নজরে নজরে বাবা এখানে এসে অনেকটা রোগ হয়ে গেছেন। অবিনাশ কহিল, তা যদি হযে থাকেন ত আমাদের অন্তায় হয়েচে এ-কথা মানতেই হবে। কারণ, দ্রষ্টব্য হিসাবে সে-বস্তুর মৰ্য্যাদা তাজমহলের চেয়ে কম হতে না । সকলেই হাসিয়া উঠিলেন ; মনোরম বলিল, সে হবে না বাবা, তোমাকে সঙ্গে যেতে হবে । তোমার চোখ দিয়ে না দেখতে পেলে, এর অৰ্দ্ধেক সৌন্দৰ্য্য ঢাকা পড়েই থাকবে । যিনি যত খবর দিন, তোমার চেয়ে আসল খবরটি কিন্তু কেউ বেশি জানে না । ইহার অর্থ যে কি তাহ অবিনাশ ভিন্ন আর কেহ জানিত না, তিনিও এই অনুরোধ করিতে যাইতেছিলেন, সহসা সকলেরই চোখ পড়িয়া গেল এক অপ্রত্যাশিত বস্তুর প্রতি। তাজের পূর্বদিক ঘুরিয়া অকস্মাৎ শিবনাথ ও তাহার স্ত্রী সম্মুখে আসিয়া পড়িল । শিবনাথ না-দেখার ভাণ করিয়া আর একদিকে সরিয়া যাইবার উপক্রম করিতেই তাহার স্ত্রী তাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া খুশি হইয়া বলিয়া উঠিল, আপ্তবাবু ও তার মেয়ে এসেচেন যে ! আশুবাবু উচ্চকণ্ঠে আহবান করিয়া কহিলেন, আপনার কখন এলেন শিবনাথবাবু? এদিকে আমুন। সন্ত্ৰীক শিবনাথ কাছে আসিয়া দাড়াইল। আণ্ডবাবু তাহার পরিচয় দিয়া কহিলেন, শিবনাথের স্ত্রী । আপনার নামটি কিন্তু এখনো জানিনে। মেয়েটি কহিল, আমার নাম কমল ৷ কিন্তু আমাকে আপনি বলবেন না আগুবাবু। আগুবাবু কহিলেন, বলা উচিতও নয়। কমল, এরা আমার বন্ধু, তোমার স্বামীর পুরিচিত। ব’সে । কল অজিতকে ইঙ্গিতে দেখাইয়াবলিল, কিন্তু এর পরিচয় ত দিলেন না। আপ্তবাবু বলিলেন, ক্রমশ: দেব বই কি। উনি আমার—উনি আমার পক্ষাত্মীয় নাম অজিতকুমার রায়। দিন-কয়েক হ’ল বিলেত থেকে ফিরে এসে আমাদের দেখতে এসেচেন। কমল, তুমি কি আজ এই প্রথম তাজমহল দেখলে ? WoS