পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

לכל আগ্রার নূতন ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের স্ত্রীর নাম মালিনী। তাঁহারই যত্নে এবং তাঁহারই গৃহে নারী-কল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠিত হইল। প্রথম অধিবেশনের উদ্যোগটা একটু ঘটা করিয়াই হইয়াছিল, কিন্তু জিনিসটা সুসম্পন্ন ত হইলই না, বরঞ্চ কেমন যেন বিশৃঙ্খল হইয়া গেল। ব্যাপারটা মুখ্যতঃ মেয়েদের জন্যই বটে, কিন্তু পুরুষদের যোগ দেওয়ার নিষেধ ছিল না। বস্তুতঃ এ প্রয়োজনে তাহার একটু বিশেষ করিয়াই নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। ভার ছিল অবিনাশের উপর। চিস্তাশীল লেখক বলিয়া অক্ষয়ের নাম ছিল ; লেখার দায়িত্ব তিনিই গ্রহণ করিয়াছিলেন। অতএব তাহারই পরামর্শ-মত এক শিবনাথ ব্যতীত আর কাহাকেও বাদ দেওয়া হয় নাই। অবিনাশের ছোটশালী নীলিম ধরে ঘরে গিয়া ধনী-দরিদ্র-নির্বিবশেষে সহরের সমস্ত বাঙালী ভদ্রমহিলাদের আহবান করিয়া আসিয়াছিলেন। শুধু যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না আগুবাবুর, কিন্তু বাতের কনকনানি আজ র্তাহাকে রক্ষা করিল না, মালিনী নিজে গিয়া ধরিয়া আনিল। অক্ষয় লেখা-হাতে প্রস্তুত ছিলেন, প্রচলিত দুই-চারিট মামুলি বিনয়-ভাষণের পরে সোজা ও শক্ত হইয়া দাড়াইয়া প্রবন্ধ-পাঠে নিযুক্ত হইলেন। অল্পক্ষণেই বুঝা গেল র্তাহার বক্তব্য বিষয় যেমন অরুচিকর তেমনি দীর্ঘ। সচরাচর যেমন হয়, পুরাকালের সীতা-সাবিত্রীর উল্লেখ করিয়া তিনি আধুনিক নারী-জাতির আদর্শ-বিহীনতার প্রতি কটাক্ষ করিয়াছেন। একজন আধুনিক ও শিক্ষিত মহিলার বাটতে বসিয়া ইহাদের “তথাকথিত শিক্ষার বিরুদ্ধে কটুক্তি করিতে র্তাহার বাধে নাই। কারণ অক্ষয়ের গৰ্ব্ব ছিল এই যে, তিনি অপ্রিয় সত্য বলিতে ভয় পান না। সুতরাং লেখার মধ্যে সত্য যাই থাক, অপ্রিয়-বচনের অভাব ছিল না । এবং এই তথাকথিত’ শব্দটার ব্যাখ্যার উদ্দেশ্বে বিশিষ্ট উদাহরণের নজির যাহা ছিল—সে কমল। অনিমন্ত্রিত এই ১.মেয়েটিকে অক্ষয় লেখার মধ্যে অপমানের একশেষ করিয়াছেন। শেষের দিকে তিনি গভীর পরিতাপের সহিত এই কথাটা ব্যক্ত করিতে বাধ্য হইয়াছেন যে, এই সহরেই ঠিক এমনি একজন স্ত্রীলোক রহিয়াছে যে ভদ্র-সমাজে নিরস্তর প্রশ্ৰয় পাইয়া আসিয়াছে। যে স্ত্রীলোক নিজের দাম্পত্য-জীবনকে অবৈধ জানিয়াও লজ্জিত হওয়া দূরে থাক, শুধু উপেক্ষার হাসি হাসিয়াছে, বিবাহ-অনুষ্ঠান যাহার কাছে মাত্র অর্থহীন সংস্কার এবং পতি-পত্নীর একান্ত একনিষ্ঠ প্রেম নিছক মানসিক দুৰ্ব্বলতা। উপসংহারে অক্ষয় vʻq: