পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ এ-কথারও উল্লেখ করিয়াছেন যে, নারী হইয়াও নারীর গভীরতম আদর্শকে যে অস্বীকার করে, তথাকথিত সেই শিক্ষিতা নারীর উপযুক্ত বিশেষণ ও বাসস্থান নির্ণয়ে প্রবন্ধ-লেখকের নিজের কোন সংশয় না থাকিলেও শুধু সঙ্কোচবশতঃই বলিতে পারেন নাই। এই ক্রটির জন্ত তিনি সকলের কাছে মার্জন ভিক্ষা চাহেন। 曇 মহিলা-সমাজে মনোরম ব্যতীত কমলকে চোখে কেহ দেখে নাই। কিন্তু তাহার রূপের খ্যাতি ও চরিত্রের অখ্যাতি পুরুষদের মুখে মুখে পরিব্যাপ্ত হইতে অবশিষ্ট ছিল না। এমন কি, এই নব-প্রতিষ্ঠিত নারী-কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী মালিনীর কানেও তাহা পৌঁছিয়াছে এবং এ লইয়া নারী-মণ্ডলে, পর্দার ভিভরে ও বাহিরে কৌতুহলের অবধি নাই। সুতরাং রুচি ও নীতির সম্যক বিচারের উৎসাহে উদ্দীপ্ত প্রশ্নমালার প্রথরতায় ব্যক্তিগত আলোচনা সতেজ হইয়া উঠিতে বোধ করি বিলম্ব ঘটিত ন, কিন্তু লেখকের পরম বন্ধু হরেন্দ্রই ইহার কঠোর প্রতিবন্ধক হইয়া উঠিল। সে সোজা দাড়াইয়া উঠিয়া কছিল, অক্ষয়বাবুর এই লেখায় আমি সম্পূর্ণ প্রতিবাদ করি। কেবল অপ্রাসঙ্গিক বলে নয়, কোন মহিলাকেই তার অসাক্ষাতে আক্রমণ করার রুচি বিষ্টলি এবং তার চরিত্রের আকারণ উল্লেখ অভদ্রোচিত ও হেয় । নারী-কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এই প্রবন্ধ-লেখককে ধিক্কার দেওয়া উচিত। ইহার পরেই একটা মহামারী কাও বাধিল । অক্ষয় হিতাহিত জ্ঞানশূন্ত হইয়৷ যা খুশি তাই বলিতে লাগিলেন এবং প্রত্যুত্তরে স্বল্পভাষী হরেন্দ্র মাঝে মাঝে কেবল বিষ্ট, এবং ক্রট বলিয়া তাহার জবাব দিতে লাগিল । মালিনী নূতন লোক, সহসা এইপ্রকার বাক্-বিতণ্ডার উগ্রতায় বিপন্ন হইয়া পড়িল এবং সেই উত্তেজনার মুখে স্ব স্ব মতামত প্রকাশ করিতে প্রায় কেহই কার্পণ্য করিলেন না। চুপ করিয়া রহিলেন শুধু আগুবাবু। প্রবন্ধ-পাঠের গোড়া হইতে সেই যে মাথা হেঁট করিয়া ছিলেন সভা শেষ না হইলে আর তিনি মুখ তুলিলেন না। আরও একটি মানুষ তর্ক-যুদ্ধে তেমন যোগ দিলেন না, ইনি হরেন্দ্র-অক্ষয়ের আলাপজালোচনায় নিত্য অভ্যস্ত অবিনাশ । ব্যক্তি-বিশেষের চরিত্রের ভালমন্দ নিরূপণ করা এই সমিতির লক্ষ্য নয় এবং এপ্রকার আলোচনায় নর-নারী কাহারও কল্যাণ হয় না, মালিনী তাহা জানিত । বিশেষতঃ লেখার মধ্যে আপ্তবাবুকেও কটাক্ষ করা হইয়াছে, এই কথা কেমন করিয়া বুঝিতে পারিয়া তাহার অতিশয় ক্লেশ বোধ হইল। সভা শেষ হইলে সে নিঃশকে নিজের আসন ছাড়িয়া এই প্রৌঢ় ব্যক্তিটির পাশে আসিয়া লজ্জিত মৃদুকণ্ঠে কহিল, নিরর্থক সাঙ্গ আপনার শান্তি নষ্ট করার জন্ত আমি দুঃখিত আণ্ডবাৰু। 坪や