পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেনা-পাওনী বারাশার নীচে প্রাঙ্গণে আসিয়া জমা হইয়াছিল। সে তাহাদের শুনাইয়া আরও একটু হাকিয়া পূজারীকে কহিল, সেদিন ভিড় ত বড় কম হবে না—ব্যাপারটা খুবই গুরুতর । মঙ্গলা মেয়েটাকে আদর করিয়া কহিল, কি গো মা, ক্ষুদে ভৈরবী ! দেখে-শুনে সব চালাতে পারবে ত? তবে আমরা আছি, হুজুর এখন থেকে নিজে দৃষ্ট রাখবেন বলেচেন, নইলে ভার বড় সহজ নয়। অনেক বিদ্যে-বুদ্ধির দরকার। বলিয়া ষোড়শীর প্রতি আড়-চোখে চাহিয়া দেখিল সে ঠাকুরের পূজার সজ্জায় তেমনি নিবিষ্টচিত্ত হইব। আছে। তারাদাসকে লক্ষ্য করিয়া হাসিয়া বলিল, কি গো ঠাকুরমশাই, নুতন অভিযেকের দিনক্ষণ কিছু স্থির হয়েছে শুনেচ ? লোকে ত আমাদের একেবারে ব্যস্ত করে তুলেচে, নাবার খাবার সময় দিতে চায় না। প্রত্যুত্তরে তারাদাস অফুটে কি যে বলিল বুঝিতে পারা গেল না। তাহারা সম্বর দরজা দিয়া যখন বাহির হইয়া গেল, তখন পিছনে পিছনে অনেকেই গেল এবং গুঞ্জনধ্বনি তাহাদের প্রাঙ্গণের অপর প্রাস্ত পৰ্য্যস্ত স্পষ্ট শুনা গেল, কিন্তু চণ্ডীর আরতির প্রতীক্ষায় যাহারা অবশিষ্ট রহিল তাহার দূর হইতে ষোড়শীর আনত মুখের প্রতি শুধু নিঃশব্দে চাহিয়া রহিল, এমন ভরসা কাহারও হইল না কাছে গিয়া একটা প্রশ্ন করে । যথাসময়ে দেবীর আরতি শেষ হইল। প্রসাঙ্গ লইয়া যে যাহার গৃহে চলিয়া গেলে, মন্দিরের ভূত্য যখন দ্বার রুদ্ধ করিতে আসিল, তখন ষোড়শী পূজারীকে নিভৃতে ডাকিয়া কহিল, চক্ৰবৰ্ত্তীমশাই, ঠাকুরের সেবায়েত আমি, না এককড়ি নন্দী ? চক্রবর্তী লজ্জিত হইয়া বলিল, তুমি বই কি মা, তুমিই ত মায়ের ভৈরবী ! ষোড়শী কহিল, কিন্তু তোমার ব্যবহারে আজ অন্য ভাব প্রকাশ পেয়েচে । বতদিন আছি, গোমস্তার চেয়ে আমার মান্তটা মন্দিরের ভেতর বেশি থাকা দরকায় । ঠিক না ? পূজারী কছিল, তাতে আর সম্মেহ কি মা ! কিন্তু— যোড়শী কহিল, ওই কিন্তুটা তোমাকে সে কটা দিন বাদ দিয়ে চলতে হবে । এই শাস্ত মুম্বুকণ্ঠ পূজারীর অত্যন্ত সুপরিচিত ; সে অধোমুখে নিরুত্তরে রহিল এবং ষোড়শীও আর কিছু কহিল না। মন্দির-দ্বারে তালা পড়িলে সে চাবির গোছা আঁচলে বাধিয়া নীরবে ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল । পরদিন সকালে স্নান করিয়া আসিয়া ত্বর হইতে দেখিতে পাইল এইটুকু সময়ের মধ্যে তাহার পর্ণকুটারখানি ঘেরিয়া বন্ধ লোক জড় হইয়া বসিয়া আছে। কাছে আসিতেই লোকগুলা ভূমিষ্ট প্রণাম করিয়া পদধূলির আশায় একযোগে প্রায় ?年 هلإسم aه